শ্রেষ্ঠ মানুষেরা হুদ আ:(পর্ব -৬)

শ্রেষ্ঠ মানুষেরা

হুদ আ:(পর্ব -৬)

প্রকান্ড এক পাহাড় চূড়ার উপর রাজকীয় এক প্রাসাদ ।এই প্রাসাদ থেকে বেরিয়ে এল এক বিশালাকায় যুবক ।ভোরের আলোয় তার সামনের লোহিত পর্বত গুলো যেন তার দিকে নত হয়ে সম্মান জানাচ্ছে। অন্তত তার কাছে তেমনটাই লাগছে। পাহাড়ি এই এলাকার চূড়ায় চূড়ায় বিরাট সব দালান।সকাল সকাল তারই মত বলবান যুবকেরা বেরিয়ে পড়েছে নির্ভয়ে। পৃথিবীর বুকে তারা এমন এক রাজত্ব গড়ে তুলেছে যাকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কোনো জাতি জন্মায়নি। আকাশ ছোঁয়া পাহাড় জয় করে তারা নিজেদের প্রভু মনে করতে লাগল। তারা ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত সভ্যতা ।প্রযুক্তির দিক থেকে সবচেয়ে অগ্রসর ।সামরিক শক্তির দিক থেকে অপরাজেয়। তারা কাউকে পরোয়া করত না। তারা কাউকে ভয় করতো না। অথচ বছরখানেকের মধ্যে সেই যুবকের লাশ পর্যন্ত কারো পক্ষে চিহ্নিত করা সম্ভব ছিল না ।
পাহাড় চূড়ার সে প্রাসাদগুলো এমনভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল যে তার একটা অংশ কেউ কখনো খুঁজে পায়নি ।বর্তমান সময়ের বৃহত্তম মেট্রোপলিটন শহর গুলোর কথা চিন্তা করে দেখুন কখনো কি ভাবা যায় এমন একটি শহর পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে ?এর অস্তিত্বের কোনো ছিটে ফোটা ও থাকবে না ।অথচ পাহাড়চূড়ায় সেই বিশালাকায় মানুষগুলোর অবস্থা তাই হয়েছিল ।
হঠাৎ করে তারা যেন হাওয়াই মিলিয়ে গিয়েছিল।কি হয়েছিল তাদের???
একসময় পৃথিবীর অন্যতম সভ্যতা কি করে তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল??
মানব ইতিহাসের নিকৃষ্টতম জাতিগুলোর কথা বলতে গেলে আদ এবং সামুদ জাতির কথা উল্লেখ করা বাঞ্ছনীয় ।পবিত্র কোরআনে অসংখ্যবার এই দুই জাতির কুকর্মের কথা এবং ধ্বংসের কথা বলা হয়েছে।
এবং এই আদ সম্প্রদায়ের কাছে আল্লাহ সুবানাহু তালা পাঠালেন নুহ আলাইহিস সালাম এর পরবর্তী নবী কে।নুহ আলাইহিস সাল্লাম এর বংশধর রা সে ধ্বংসাত্মক বন্যার পর নতুন করে সমাজ গঠন করতে লাগলেন।বছরের পর বছর পার হতে লাগলো।আগের প্রজন্মের মানুষেরা নতুন প্রজন্মর মানুষের বুঝাতে লাগলো।তারা কত ভাগ্যবান যে,তাদের পূর্বপুরুষেরা নুহ আলাইহিস সালাম এর আহবানে সাড়া দিয়ে তার সাতে জাহাজে উটেছিল।
এবং নুহ আলাইহিস সালাম এর তিন সন্তান সাম,হাম, ইয়াফিজের বংশধরেরা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।এবং কয়েক প্রজন্ম পর্যন্ত পৃথিবীতে কোন শিরক ছিল না।ছিল শুধু এক আল্লাহর উপাসনা।
এবং মানব ইতিহাসের এই পর্যায়ে এসে আমরা একটা প্যাটার্ন লক্ষ করতে পারি।যখন আদম আলাইহিস সালাম কে পৃথিবীতে পাঠানো হলো তখন পৃথিবীতে কোন মুশরিক ছিল না। একমাত্র এক আল্লাহর ইবাদতকারী বান্দা ছিল।কিন্তু আস্তে আস্তে শয়তানের প্ররোচনায় একটু একটু করে মানব সমাজে শিরক ডুকে যায়।
এরপর শিরক ছড়িয়ে পড়ে গোটা সমাজে।এমন অবস্থায় আল্লাহ নবী পাঠান।সে নবীর ডাকে খুব অল্পসংখ্যক মানুষ সাড়া দেয়।এবং বাকিদের অনেক আহ্বান করার পরেও তারা শিরক থেকে সরে আসে না।অবশেষে আল্লাহ মুশরিকদের ধ্বংস করেন।এবং আবারও সে অল্প সংখ্যক মুওয়াহেদ বা এক আল্লাহর উপর ঈমান আনা বান্দারা নতুন করে সমাজ গঠন করে।
এবং ধীরে ধীরে আবারও শয়তান সেই সমাজে শির্কের বীজ বুনা আরম্ভ করে। ঐতিহাসিক দের মতে সাম ইবনে নুহ এর বংশধরদের মধ্যে থেকেই জন্ম নেয় আদ সম্প্রদায়।এবং তারা ছিল সবচেয়ে প্রাচীন আরব জাতি ।যাদেরকে মুসলিম জিনোলজিস্ট রা বলে থাকে বিলুপ্ত আরবেরা।
তাদের মূল শহরের নাম ছিল ইরাম।এবং তাদের কথা আল্লাহ তায়ালা সূরা ফাজরে উল্লেখ করে বলেন
সূরা আল ফাজ্‌র (الفجر),
إِرَمَ ذَاتِ ٱلْعِمَادِ
উচ্চারণঃ ইরামা যা-তিল ‘ইমা-দ
অর্থঃ যাদের দৈহিক গঠন স্তম্ভ ও খুঁটির ন্যায় দীর্ঘ ছিল এবং
সূরা আল ফাজ্‌র (الفجر), আয়াত: ৮

ٱلَّتِى لَمْ يُخْلَقْ مِثْلُهَا فِى ٱلْبِلَٰدِ
উচ্চারণঃ আল্লাতী লাম ইউখলাকমিছলুহা-ফিল বিলা-দ।
অর্থঃ যাদের সমান শক্তি ও বলবীর্যে সারা বিশ্বের শহরসমূহে কোন লোক সৃজিত হয়নি
ইবনে কাসীর এই আয়াতের ব্যাখ্যা করে বলেন আদ গুত্র ছিল ইরাম বিন আউস,বিন সাম ,বিন নুহের বংশধরেরা।অর্থাৎ পুরো আদ সম্প্রদায় ছিল নূহ আলাইহিস সালাম এর পুত্র সাম এর বংশধর।
এবং তাদের পূর্ব পুরুষ ইরামের নামে নাম রাখা তারা যে শহর নির্মাণ করেছিল সেই শহরটির বিশেষত্ব ছিল বিস্ময়কর সব স্তম্ভ।বা পিলার।
প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের স্থাপত্য র শিল্পের দিকে তাকালে ও আমরা দেখবো সেখানে উঁচু উঁচু স্তম্ভ বা কলাম লক্ষণীয় ভুমিকা রাখে।এবং সেই স্তম্ভগুলো নির্মাণ ও শৈল্পিক সৌন্দর্য্য বলে দেই তখনকার সেই সম্প্রদায় বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত জাতি গুলুর মধ্যে একটি ছিল।আদ সম্প্রদায় এর সে স্তম্ভগুলো ছিলো তার চাইতে আরো বহুগুণে বেশি আশ্চর্যনক।
কেননা স্বয়ং আল্লাহ তাদের সে স্তম্ভগুলো কে বর্ণনা করে বলেন
ٱلَّتِى لَمْ يُخْلَقْ مِثْلُهَا فِى ٱلْبِلَٰدِ
উচ্চারণঃ আল্লাতী লাম ইউখলাকমিছলুহা-ফিল বিলা-দ।
অর্থঃ যাদের সমান শক্তি ও বলবীর্যে সারা বিশ্বের শহরসমূহে কোন লোক সৃজিত হয়নি
তাদের স্থপতি শিল্পের কারুকাজ দেখে স্বয়ং আল্লাহ বলছেন এরকম কাজ আর কোথাও দেখা যায় না।
আল্লাহ তাদের কে এত প্রতিভা এত জ্ঞান বুদ্ধি এত শক্তি দিয়েছেন অথচ তারা আল্লাহকে অমান্য করলো।তাদের সেই শৈল্পিক নৈপুণ্য আক্ষরিক অর্থেই ধুলোয় মিশে গেলো।
আল্লাহ তাদের মধ্যে থেকেই একজন কে রসূল হিসেবে বেছে নিলেন ।পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন আদের কাছে আমি তাদের ভাই হূদকে পাঠালাম।
এবং আল্লাহ তায়ালা নীয়ম যে তিনি প্রতিটি জাতির কাছে তাদের মধ্যে থেকেই একজন রসূল বাছাই করে পাঠান।এতে করে যে রসূল তাদের কাছে আল্লাহর বার্তা পৌঁছে দেবে সে যেন সেই মানুষদের মনের অবস্থা বুঝতে পারে।তাদের প্রতি টান অনুভব করে।এবং তাদের সাতে ধৈর্য এবং সহানুভূতি সহকারে আল্লাহর পথে আহবান করতে পারে।
তেমনিভাবে বর্তমান সমাজে যখন আমরা চারিদিকে পাপাচার দেখব যে সব মানুষেরা পাপে লিপ্ত আছে তাদের যেন আমরা আরেকজনের ভাই আরেকজনের বোন আরেকজনের সন্তান হিসেবে না দেখি।বরং তাদের কাছে যখন আমরা আল্লাহর বার্তা পৌঁছাব তখন যেন আমি মনে করি আমি তো আমার নিজের ভাই দের সাতে কথা বলছি।সে যদি জান্নাতে যেতে না পারে এর মানে যেন আমার আপন ভাই টাই জান্নাত থেকে বঞ্চিত হলো।
অতএব ইসলামের পথে আহবান কারি প্রতিটি ব্যাক্তিকে সহানুভূিশীল হতে হবে। গুনাহ্ কে ঘৃণা করতে হবে।গুনাহগার ব্যাক্তিকে নই।
হুদ আ: ছিলেন পরবর্তী আরব জাতির পিতা। রসূল সা এর সময়কার আরবজাতি এসেছিল মূলত দুটি বংশ থেকে। একদিকে ছিল কাহ্তানিয়া আরব, যারা ইয়েমেন অঞ্চল থেকে এসেছিল।এবং তারাই ছিল হুদ আ:এর বংশধরেরা।অন্যদিকে ছিল আদনানিয়া আরব ,যা ছিল ইসমাইল আ:এর বংশধর।এবং রসূল সা: ছিলেন আদনানি গোত্রের বংশধর।
হুদ আ:এর সময় আদ সম্প্রদায় এ শিরক ডুকে গিয়েছিল গভীরভাবে। তিনি তাদের উদ্দেশ্য করে বলেন আমার ভাইয়েরা তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো। উনি ছাড়া তোমাদের আর কোন্ ইলাহ্ আছে? তোমরা কি ভয় করবে না?
কিন্তু সমাজের হোমড়ো চোমড়ো যারা ছিল তার কথায় রেগে গেলো।আল্লাহ বলেন তার সমাজে প্রতিষ্ঠিত ব্যাক্তিরা যারা অবিশ্বাসী ছিল তারা বলল তুমি তো একেবারেই বোকা।এবং নিঃসন্দহে তুমি মিথ্যাবাদী।
এবং তিনি যখন তাদের কে বলতেন মানুষকে মৃত্যুর পর আবারও পুনরুজ্জীবিত করা হবে।এবং এরপর তাদের কর্মকান্ডের জন্য তাদের বিচার করা হবে।তখন তারা বলে উঠলো সে কি তোমাদের এই ওয়াদা করছে যে,তোমরা যখন মরে মাটি আর হাড্ডি গুড্ডি হয় যাবে।এরপর তোমাদের আবার পুনরুজ্জীবিত করা হবে?সে তোমাদের যা ওয়াদা করছে তা সত্যের ধারে কাছেও না।
আশ্চর্যজনক বিষয় হলো আজও মানুষের মাঝে মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবিত হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে।কেউ কেউ হইতো প্রকাশ্যে বলে মানুষ একবার মরে গেলেই শেষ আখেরাহ বলতে কিছু নেই।আবার কেউ কেউ সরাসরি এই কথা না বললেও তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে প্রমাণ করে দেয় যে তারা আখেরাত বলে কিছুতেই বিশ্বাস করে না।বিচার দিবস বলতে কোন কিছুতে বিশ্বাস করে না।যদি সত্যিকার অর্থে একজন মানুষ আখেরাত এবং শেষ দিবসে বিশ্বাস করতো সে কি করে জেনে বুঝে শত শত মানুষের অধিকার লংঘন করতো??ঘুষ নিতো, দুর্নীতি করতো,ধর্ষণ করতো,মুখে না বললেও তারা যেন তাদের কাজের মধ্যদিয়েই চিৎকার করে বলছে যে হুদ তোমার ওয়াদা মিথ্যা।,হে আদম তোমার ওয়াদা মিথ্যা,হে মোহাম্মদ স:তোমার ওয়াদা মিথ্যা,হে আল্লাহ তোমার ওয়াদা মিথ্যা।
নাউযুবিল্লাহ্।
সমাজের ক্ষমতাবান ব্যাক্তিরা হুদ আ:এর নামে মিথ্যা প্রবাদ দেওয়া আরম্ভ করলো।তারা বলতে লাগলো সে যেহেতু আমাদের দেব দেবতাদের পূজা করে না তাই আমাদের দেব দেবতাদের অভিশাপে তার মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে। সে পাগল হয়ে সব উল্টাপাল্টা কথা বলছে। খুব অল্পসংখ্যক ব্যক্তি তাদের মিথ্যাচার ধরতে পারল ।এবং হুদ আলাইহিস সালামের বার্তার সত্যতা বুঝতে পেরে ইসলাম গ্রহণ করলো।
বেশিরভাগ মানুষ ই হুদ আলাইহিস সালাম এর নামে যে মিথ্যা খবর ছড়ানো হলো সবই হজম করতে লাগল। বর্তমান সময়ের সাথে একবার মিলিয়ে দেখুন একজন ব্যক্তির নামে যখন সোশ্যাল মিডিয়াতে কুৎসা রটানো হয়।রমরমা গল্প পাশ করে দেওয়া হয়, কয়জন মানুষ সেটার সত্যতা যাচাই করতে চায়?? কয়জন মানুষ বলে এসব ব্যক্তিগত গল্পের সাথে আমি লিপ্ত হব না ।আমি আমার আখেরাতের দিকে মনোযোগ দেই ।অন্যদিকে কয়জন মানুষ এরকম খবর ছাপা হওয়া মাত্র লাইক শেয়ার কমেন্ট এর বন্যায় ভাসিয়ে দেয়। হুদ আলাইহিস সালাম এর নিরলস প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আদের লোকেরা
তাকে নানাভাবে বাধা দিতে লাগলো ।নিজেদের শক্তি আর সামর্থ্য এ এতটাই বিমোহিত ছিল যে তারা অহংকার করে বলতে লাগল আমাদের চেয়ে শক্তিশালী আর কে আছে ???

অথচ আল্লাহ বলেন তারা কি এটা ভাবেনা,, যে আল্লাহ যিনি তাদের সৃষ্টি করেছেন তিনি তাদের চেয়ে বেশি শক্তিশালী ।
কিন্তু তারা আমাদের নিদর্শনগুলো প্রত্যাখ্যান করল। অবশেষে আহবানের সময় ফুরিয়ে গেল ।পরিণামের সময় চলে এলো ।নুহ আলাইহিস সালাম এর কওম কে অল্লাহ ধ্বংস করেছিলেন পানি দিয়ে।যে পানি ছাড়া অচল সে পানি আল্লাহর হুকুমে জীবন ধ্বংসের কারণ হতে পারে। তা আল্লাহ্ দেখিয়ে দিয়েছিলেন।
বাতাস ছাড়া ও জীবন অচল। প্রতিটি মুহূর্তে আমরা যখন নিঃশ্বাস নেই অথচ এই বাতাসের লাগাম যখন ছেড়ে দেয়া হয় আল্লাহর সে যখন হুকুম পালন করতে ছুটে চলে আল্লাহর ই একটি সৃষ্টির সামনে মানুষের সবচেয়ে উন্নত সভ্যতা ও কিভাবে মাথা নত করে? তা আদ সাম্প্রদায় টের পেয়েছিল। আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন
وَأَمَّا عَادٌ فَأُهْلِكُوا۟ بِرِيحٍ صَرْصَرٍ عَاتِيَةٍ
উচ্চারণঃ ওয়া আম্মা- ‘আ-দুন ফাউহলিকূবিরীহিন সারসারিন ‘আ-তিয়াহ।
অর্থঃ এবং আদ গোত্রকে ধ্বংস করা হয়েছিল এক প্রচন্ড ঝঞ্জাবায়ূ,
سَخَّرَهَا عَلَيْهِمْ سَبْعَ لَيَالٍ وَثَمَٰنِيَةَ أَيَّامٍ حُسُومًا فَتَرَى ٱلْقَوْمَ فِيهَا صَرْعَىٰ كَأَنَّهُمْ أَعْجَازُ نَخْلٍ خَاوِيَةٍ
উচ্চারণঃ ছাখখারাহা-‘আলাইহিম ছাব‘আ লাইয়া-লিওঁ ওয়া ছামা-নিয়াতা আইইয়া-মিন হুছূমান ফাতারাল কাওমা ফীহা-সার‘আ- কাআন্নাহুম আ‘জা-ঝুনাখলিন খা-বিয়াহ।
অর্থঃ যা তিনি প্রবাহিত করেছিলেন তাদের উপর সাত রাত্রি ও আট দিবস পর্যন্ত অবিরাম। আপনি তাদেরকে দেখতেন যে, তারা অসার খর্জুর কান্ডের ন্যায় ভূপাতিত হয়ে রয়েছে।
একটা ঘূর্ণিঝড় 10 মিনিটেই কেমন করে বড় বড় দালান কেউ ধ্বংসস্তূপে পরিণত করতে পারে তা আমরা দেখেছি।টানা সাত রাত ও আট দিন ধরে বয়ে যাওয়া বিধ্বংসী ঝড় কেমন পরিণতি নিয়ে আসতে পারে তা আমাদের কল্পনার বাইরে। সেই সময়ের সবচেয়ে উন্নত সভ্যতা এক সপ্তাহের মাথায় এমনভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল যে হাজার হাজার বছর পর আজও আর্কিওলজিস্টরা আদ সম্প্রদায় টিক কোথায় অবস্থানরত ছিল সে ব্যাপারে বিতর্ক করে থাকেন ।তাদের লেগেসি বলতে কিছুই থাকলো না ।উত্তরাধিকার বলতে ও কিছু থাকলো না।
তাদের স্থপতি শিল্পের কোনো প্রমাণ থাকলো না ।তাদের দৈহিক শক্তিমত্তার কোনো চিহ্ন থাকলো না। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বিশ্বাসিদের কাছে তারা চরম ব্যর্থতা আর অবাধ্যতার উদাহরণ হয়ে রয়ে গেল। এবং আখেরাতে তাদের জন্য যা অপেক্ষা করছিল তা তো আরো অনেক , ভয়ংকর।হুদ আলাইহিস সালাম ও তার অল্প সংখ্যক অনুসারীরা আল্লাহর হেদায়েত পেয়ে সে ঝড় থেকে রেহাই পেয়েছিলেন।
ঝড়ের পরবর্তী বছরগুলোতে তারা ধীরে ধীরে নতুন করে তাদের সমাজ গঠন করতে লাগলেন। এবং আবারো সেই সমাজে শুধুমাত্র মূওওয়াহেদ এক আল্লাহর উপর বিশ্বাস করা মানুষেরা রয়ে গেল ।হুদ আলাইহিস সালাম এর মৃত্যু পর্যন্ত সে সমাজে আর কখন ও শিরক প্রবেশ করেনি।


Baseera ইউনিউব চ্যানেল থেকে সংগৃহিত




কোন মন্তব্য নেই

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

konradlew থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.