দ্বীনি ভ্যালেন্টাইন ও পবিত্র প্রেম!


প্রেমে পড়লে কি হয় এটা আমরা কমবেশি সবাই জানি। পড়াশুনার ক্ষতি হয়, টাকা পয়সার অপচয় বাড়ে, অহরহ মিথ্যা বলতে হয়, পেট ভরা অবস্থায় খেতে হয়। এগুলো আমরা সবাই জানি। আমার বিষয়টা অন্য। প্রেমে পড়লে একটা মানুষের ইসলামে আসা কিংবা ইসলামে থাকার উপর কিরুপ প্রভাব সাধারণত পড়ে সেটা দেখাই মুল উদ্দেশ্য। সময় বাচানোর জন্য ডিটেইলস লিখতে পারলাম না বলে দুঃখিত। সংক্ষেপে বলি,
.
যখন একটা ছেলে কোন মেয়ের জন্য "মোহগ্রস্থ" হয় যেটাকে আমরা সচারচার "প্রেম" বা "ভালোবাসা" বলি তখন সে আসলে আল্লাহ, আখিরাত, মৃত্যু এগুলো নিয়ে ভাবার সময় বের করতে পারে না। এমন না যে সে আসলে অবিশ্বাস করে বা সন্দেহ রাখে বরং সে সময়ই পায় না। কোথায় যাবে, কি খাবে, কোন দিন কিভাবে সেলিব্রেট করবে, কি করে তাকে মজা দেওয়া যায়, কোন কথা বলে হাসানো যায় ইত্যাদি ইত্যাদি কাজ সফলভাবে আনজাম দেওয়ার প্লান করা, এক্সিকিউট করা সময় সাপেক্ষ বৈকি। আর যদি একদম কাছেই না থাকে তাহলে সারাদিনের ফিরিস্তি ফোনে শোনাতেও তো কথায় কিছু রঙ লাগাতে হয়। কোন রঙ কোন কথায় লাগাতে হবে এজন্য সস্তা কিছু উপন্যাস বা বলিঊডের ডায়লগ মনে রাখতে হয়। অনেক কাজ অনেক সময়।
.
মেয়েদের জন্য ব্যাপারটা এতই মারাত্মক যে সে এতই মোহাচ্ছন্ন হয় যে রাস্তায় থেমে থাকা ট্রাকেও বাড়ি খেতে পারে। এতো সৎ মেয়েরা আর অসতী মেয়েদের রীতিমত প্লান করে গুটি চালাতে হয় না জানি দুই গুটি এক ঘরে চলে আসে!
.
বলা বাহুল্য অতীতের সেই সময় আর নাই। রুম টুম যোগাড় করা এখনকার সময়ে ওয়ান টু এর ব্যাপার। সি এন জি বা রিক্সায় যদি আপনি ওসব অহরহ দেখে থাকেন তাহলে বুঝতে আর কিছু বাকী থাকে না। সুতরাং যে অভিভাবকগন ভাবছেন তাদের প্রেমিক ছেলে মেয়ে তুলসি পাতা তারা অন্যের মেয়েকে রিক্সায় ধর্ষিত হতে দেখলে দয়া করে নিজের ছেলে মেয়ের কথা আগে মনে করবেন।
.
অনেক ছেলে মেয়ে আছে যারা হয়তো কোন সন্ধ্যায় কোন এক দায়ীর আহবানে চিন্তিত হয়। কিন্তু রাত বাড়তেই হ্যালোর সাথে মিলিয়ে যায় তার ফিরে আসার চিন্তা। শরীর মন সব উম্মাদ হয়ে বুদ হয়ে যায় অজানা মোহে। মাতাল মন, মাতাল সব চাহিদা হুশ কিভাবে থাকে!
.
ফিরে আসার তীব্র বাসনায় নয় বরং কোন ধার্মিক বন্ধুর পাল্লায় পড়ে অনেক ছেলের আখিরাতের হুশ যদিওবা আসে কিন্তু তখন সে সহজে একা ফিরে আসতে পারে না। জল যেহেতু গড়িয়ে যায় অনেক তাই মেয়েও চায় না যে সে ফিরে যাক। এটা বিপরীতও হতে পারে। মেয়ে ফিরে আসতে চাইলে ছেলে ছাড়তে চায় না। এই সমস্যাটা খুবই প্রকট ও ব্যাপক। দেখা যায় ধীরে ধীরে প্রেমের টান আখিরাতের টানকে ভুলিয়ে দেয়।
.
কখনওবা একে অন্যকে কনভিন্স করে ফেলে। দুজনেই আল্লাহর ভয়ে ভীত হয়। পরিবারে বিয়ের ডাক তোলে। আহা! সেই সময় বাবা-মা রা হয়ে ওঠে চীনের প্রাচীর। এতোদিন ধরে ছেলের হিরোইজম এনজয় করলেও ছেলের বউ হওয়াকে মেনে নিতে পারে না। আর মেয়ের বাবারা যদিও এতোদিন দেখে না দেখার ভান করেছে তখন আর সামনে দিয়ে মেয়ে স্কুলেও যেতে পারে না। অধিকাংশ সময় এই সমস্ত কিছুর শেষ হয় একরাশ হতাশায়। স্বামীর ডোরে বাধা বধু অতীত স্মৃতির জাবর কাটে। অতীতকে ছুড়ে ফেলা যায় কিন্তু ভুলে যাওয়া যায় না।
.
বন্ধুরা তোমাদের বলছি, গ্লাসের পচা পানি না ফেলে যদি তাতে ভালো পানি ঢালো কোন লাভ নাই, ভালোটুকুও হারিয়ে যাবে। যতক্ষণ না তুমি মানব শয়তানকে শয়তান না জানবে ততক্ষন তার ওয়াস ওয়াসা অতিক্রম করতে পারবে না। এমন খুবই কম হয়েছে যে অনৈতিক প্রেমের সম্পর্ক রেখে আল্লাহর পথে আসতে পেরেছে।
.
ইদানিং শুরু হয়েছে নতুন ফিতনা। বিবাহের কথা তুলে। দ্বীনি ভাই দ্বীনি বোনেরা মাসের পর মাস চ্যাট করে যাচ্ছে। বিয়ের আলাপ আর শেষই হয়না। মেয়ে যে চাইলেই কোন ছেলেকে প্রপোজ করতে পারে! প্রেমের জন্য নয়তো ভাইয়া, বিয়ের জন্য। এই সুযোগে ইসলামিস্ট ভাইয়া আর আপু যে কি সুন্দর চ্যাট করে যাচ্ছে, একে অপরকে নসীহা দিয়ে যাচ্ছে!
.
আচ্ছা, যোগাযোগ কম করবো, কেবল মেসেজ, কোন কথা বলব না। চলবে?
.
না চলবে না। কারো চলেনি কখনও। তোমারও চলবে না। যে অন্তরে হারাম বাসা বেধেছে সে অন্তরে আল্লাহর রহম আসতে পারে না। আল্লাহ্‌ কারও বুকে দুটি হৃদয় তৈরী করেন নি। যাদেরকে তুমি দেখছো একই সাথে প্রেম আর ইবাদাত চালিয়ে যাচ্ছে আদতে তাদের অন্তরে ইবাদাতের কোন প্রভাব পড়েনি। মুহুর্তক্ষনের সুযোগ সেটা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট। এই ব্যাপারটা অনেকটা Either with Allah or with the Devils.
.
মৃত্যু তোমার কাছে আসার আগেই যেন তুমি আল্লাহর কাছে যেতে পার। এটাই কামনা। আল্লাহ্‌ সহজ করুক।

.
লেখাঃ এস এম নাহিদ হাসান (আল্লাহ্‌ তাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন!)

কোন মন্তব্য নেই

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

konradlew থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.