আল্লাহর কাছে আসার গল্প-৩

ইংশাআল্লাহ আমিও হতে চাই এমন মা

আল্লাহর কাছে আসার গল্প-৩, ইংশাআল্লাহ আমিও হতে চাই এমন মা


একজন কুরআনের শিক্ষক গল্পটা বলছিলেন-

আমার কাছে একটি ছোট্ট বালক এলো, মাদ্রাসায় ভর্তি হতে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, কুরআনের কোনো অংশ মুখস্থ আছে কি? বলল, জী আছে। আমি বললাম, তাহলে আম পারা থেকে পড়ো। সে পুরা পারাটি পড়ল। এরপর জিজ্ঞেস করলাম, সুরা মুলক মুখস্থ আছে? বলল, আছে। এই বলে সে সুরা মুলক পড়ে শোনাল।


এতো ছোট ছেলে, এতো সুরা মুখস্থ! বেশ অবাক হলাম আমি। এরপর সুরা নাহল পড়তে বললাম। আমাকে অবাক করে দিয়ে সে সুরা নাহলও শোনাল। আমি কৌতুহলবশত জিজ্ঞেস করলাম, সুরা বাকারা মুখস্থ করেছ? আমাকে পরম বিস্ময়ে আবিষ্ট করে সে সুরা বাকারাও শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুনিয়ে দিল। বিনা লুকমায়, তারতীলের সাথে তেলোআত করে। আমি বালকটিকে জিজ্ঞেস করলাম, তাহলে কি তোমার গোটা কুরআনই মুখস্থ। সে হেসে উত্তর দিল, জী হাঁ।

.
আমি অত্যন্ত আশ্চর্য হলাম- এতো অল্প বয়সেই ছেলেটি সম্পূর্ণ কুরআন মুখস্থ করে নিয়েছে!! বললাম, আগামীকাল তোমার অভিভাবককে নিয়ে আসবে অবশ্যই।
.
আমি ভাবলাম, নিশ্চয় তার পিতা জাদরেল কোন আলেম হবেন। তা না হলে সন্তানের তো এতো অল্প বয়সে হাফেজ হবার কথা নয়। আমি ছেলেটির অভিভাবকের সাথে সাক্ষাতের আশায় রাত অতিবাহিত করলাম।
পরদিন পিচ্চি হাফেজ ছেলেটি আসল। সঙ্গে তার সৌভাগ্যবান পিতা।




পিতাকে দেখে আমার আশ্চর্যের কোন সীমা রইল না । মুখে সুন্নাতী দাঁড়িটা পর্যন্ত নেই। লেবাস পোশাক একেবারেই সাধারণ। আলেম তো নয়ই, দীন সম্পর্কে জ্ঞানও নেই তেমন।
.
লোকটিই আমার হতবাক অবস্থা দেখে মুখ খুললেন। তিনি বললেন, আমাকে আর আমার সন্তানকে দেখে নিশ্চয় খুব অবাক হচ্ছেন! শুনলে আরো অবাক হবেন যে, আমার এর মতো আরো তিন ছেলে হাফেজে কুরআন। আর আমার ছোট মেয়েটির বয়স এখন মাত্র চার বছর, সেও আম পারা মুখস্থ করে নিয়েছে।
.
আমি এখন রীতিমত স্তব্ধ! জিজ্ঞেস করলাম, কীভাবে এমন অসম্ভব সম্ভব হলো??
ছেলেটির পিতা বললেন, এই সব হওয়ার পিছনে রয়েছে একজন নারীর দৃঢ় ইচ্ছা আর দীগন্ত প্রসারী স্বপ্ন। সেই স্বাপ্নিক মহিলা হলেন ওদের মা, আমার স্ত্রী।
.
যখনই কোন বাচ্চা কথা বলতে শুরু করত তখন তিনি তাকে কুরআন হিফজ করাতে শুরু করে দিতেন।
এরপর সন্তানদের মাঝে প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করতেন। কোন কোন সময় বলতেন, যে এই পারা আগে মুখস্থ করতে পারবে তারা কথা মতোই আমরা বেড়াতে যাব। আবার বলতেন, যে আগে এই সুরা মুখস্থ করতে পারবে তাকে আগে নাস্তা দেয়া হবে। কখনো বলতেন, যে পিছনের পারাগুলো নির্ভুল শোনাতে পারবে তাকে সুন্দর একটি খেলনা মটরগাড়ী কিনে দেয়া হবে। কখনো বলতেন, যে সবচেয়ে ভালোভাবে সবক শুনাতে পারবে আগামী ছুটিতে তার পছন্দের জায়গাতেই আমরা বেড়াতে যাব।
ইংশা আল্ল'হ।
.
এভাবে আমার সন্তানদের মাঝে শৈশব থেকে সবসময়ই কুরআন হিফজের প্রতিযোগিতা চলত। এভাবেই তারা সবাই একসময় কুরআনের হাফেজ হয়ে গেছে।
.
সন্তানদের হাফেজ আলেম হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এমন একজন নেকবতী দিনদার মা‘র কোন বিকল্প নেই।
-মুফতি আব্দুল্লাহ তালহা (হাফিঃ)














কোন মন্তব্য নেই

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

konradlew থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.