আল্লাহর কাছে আসার গল্প-৪

(লেখিকার পাঠানো লেখা হুবহু তুলে দেওয়া হয়েছে)


আল্লাহর কাছে আসার গল্প-৪


আলহামদুলিল্লাহ্‌,, আল্লাহ তা'আলা আমাকে হিদায়াত দান করেছেন প্রায় এক বছর আগে।।আমার জন্ম একটা নামমাত্র মুসলিম পরিবারে,,যেখানে ইসলাম মানা শুধু রমজানের সাওমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।আমাদের পরিবারে আমরা দুই বোন,,বাবা আর মা।। পরিবারের কেউ এক ওয়াক্ত সালাতও আদায় করে না,,যদিও এখন আলহামদুলিল্লাহ্‌ আমার মা আর বোন কিছুটা সালাত শুরু করেছে।।ছোট বেলা থেকে কখনো বাবা মাকে বলতে শুনিনি নামায পড়তে হবে রোযা রাখতে হবে,,বরং তারা সব সময় চেয়েছেন তাদের মেয়ে অনেক ভালো করে পড়াশুনা করুক,,একজন ভালো ডাক্তার হোক।।দৈনিক ৫ ওয়াক্ত সালাত তো দূরে থাক পড়াশুনার প্রব্ললেম হবে বলে রোযাও রাখতে দেন নি,,আর আমিও রাখি নি।।আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্যই ছিল মেডিকেল এ চান্স পাওয়া অন্য কোনো দিকে কখনো আমার খেয়াল ছিল না।।দ্বীনের বুঝ না থাকলেও আমি কখনো উশৃঙ্খল ছিলাম না,,তাই এলাকায় ভদ্র মেয়ে হিসেবেই পরিচিত ছিলাম।। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি সরকারী মেডিকেলে চান্স পাই,,বাসা থেকে প্রথম বারের মত বাইরে কোথাও থাকার সুযোগ পেয়ে যাই।।

শুরু হয় আমার একার পথ চলা,,একদিকে নতুন পরিবেশ অন্যদিকে মেডিকেল এর প্রচুর প্রেশারে ডিপ্রেশড হয়ে যাই।।অনেক বন্ধুবান্ধবের সাথে পরিচয় হয়।শুরু হয় ফ্রি মিক্সিং,,একদম জাহেলি জীবন যাকে বলে।।প্রচুর গান শুনতাম,,প্রচুর হ্যাং আউট আরফেসবুকে এই সবকিছুর পিক দেয়া।।এত কিছুর পরও কই জানি একটা কমতি ছিল।।দিন শেষে আমি একা।।এভাবেই আমার দিন কাটছিল।।হঠাত ফেসবুকে একটা পোস্টকে আল্লাহ আমাকে হেদায়তের উসিলা করে দেন,,আলহামদুলিল্লাহ সেই থেকে শুরু।। একদিনেই গান শোনা চিরদিনের মতো বন্ধ করে যায়,,শুরু হয় হেদায়াতের পথে চলা।।তবে আমার জন্য সবকিছু এত সহজ ছিলো না।।ফেসবুকে এত পিক ডিলিট করতে না পেরে আর গায়েরে মাহরামদের এভোয়েড আগের আইডিটা ডিলিট করে দিলাম।নতুন আইডি খুললাম আর পরিবার থেকে আমার চেঞ্জটা এত সহজে মেনে নেয়নি,,তাদের মতে শুধু নামায আর রোযা রাখলেই হবে,,পরদা করার কোনো দরকার নেই।।যখন তাদেরকে বুঝাতে গেলাম তখনই ঝামেলা শুরু হলো।।বলতে লাগলো আমি জঙ্গি হয়ে যাচ্ছি কি না!!!অনেক বুঝানোর পরেও যখন তারা মানে নাই,,তখন আমি লুকিয়ে পর্দা করা শুরু করি আজ ৫ মাস হলো।।আলহামদুলিল্লাহ্‌ কলেজে আমি পরিপূর্ণ পর্দা করার চেস্টা করছি,,বাসায় কেউ জানে না আমার বোন ছাড়া।বাসায় যাওয়ার সময় আবার ত্রিপিছ পরেই যাই,,তখন অনেক কষ্ট হয়।।।সারাদিন রাত বাবা মার জন্য দুয়া করি যেন তারা হেদায়াত পান আর এমন একজন জীবনসঙ্গীর আশা করি যিনি আমাকে এই জাহিলিয়াত থেকে বের করে নিয়ে যাবেন।
(নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোন)
দ্বীনে ফেরার গল্প শেয়ারের আয়োজক
শামছুন্নাহার রুমি



কোন মন্তব্য নেই

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

konradlew থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.