কুরাইশগণ যখন দেখলেন যে, মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে তাঁর দ্বীনের দাওয়াত এবং তাবলীগ থেকে নিবৃত্ত করার কোন কৌশল কার্যকর হচ্ছে না তখন তাঁরা পুনরায় চিন্তাভাবনা করে তাঁর তাবলীগী কর্মকান্ডকে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করে ফেলার জন্য নানামুখী পন্থা-প্রক্রিয়া অবলম্বন শুরু করলেন। যে সকল পন্থা তাঁরা অবলম্বন করলেন তা হচ্ছে যথাক্রমেঃ
বিভিন্ন অবমাননাকর উক্তি ইত্যাদির মাধ্যমে নাবী কারীম (সাঃ)-কে তাঁরা জর্জরিত এবং অতীষ্ঠ করে তুলতে চাইলেন। এর অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য ছিল মুসলিমগণকে সন্দেহপরায়ণ, বিপন্ন ও ব্যতিব্যস্ত করে তাঁদের উদ্যম ও কাজের স্পৃহাকে নষ্ট করে দেয়া। এ উদ্দেশ্যে মুশরিকগণ রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে অশালীন অপবাদ এবং গালিগালাজ করতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি। তাঁরা কখনো তাঁকে পাগল বলেও সম্বোধন করতেন।
‘‘কাফিররা যখন কুরআন শুনে তখন তারা যেন তাদের দৃষ্টি দিয়ে তোমাকে আছড়ে ফেলবে। আর তারা বলে, ‘সে তো অবশ্যই পাগল।’
(আল-ক্বালাম ৬৮ : ৫১)
অধিকন্তু, নাবী কারীম (সাঃ) যখন কোথাও গমন করতেন এবং তাঁর দুর্বল ও মজলুম সাহাবীগণ (রাঃ) তাঁর নিকট উপস্থিত থাকতেন তখন এদের লক্ষ্য করে মুশরিকগণ উপহাস করে বলতঃ
২৯.পাপাচারী লোকেরা (দুনিয়ায়) মু’মিনদেরকে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত।
৩০. আর তারা যখন তাদের পাশ দিয়ে অতিক্রম করত তখন পরস্পরে চোখ টিপে ইশারা করত।
৩১. আর তারা যখন তাদের আপন জনদের কাছে ফিরে আসত, তখন (মু’মিনদেরকে ঠাট্টা ক’রে আসার কারণে) ফিরত উৎফুল্ল হয়ে।
৩২. আর তারা যখন মু’মিনদেরকে দেখত তখন বলত, ‘এরা তো এক্কেবারে গুমরাহ্।’
৩৩. তাদেরকে তো মু’মিনদের হিফাযাতকারী হিসেবে পাঠানো হয়নি।’
(আল-মুত্বাফফিফীন ৮৩ : ২৯-৩৩)
মুশরিকদের উপহাস, ঠাট্টা-বিদ্রুপ, হাসাহাসি ও বিভিন্নভাবে আঘাতের মাত্রা এর বাড়িয়ে দিল যে তা নাবী (সাঃ)-কে মর্মাহত করে তুলল।
এ ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন,
قَالَ فَمَا خَطْبُكُمْ أَيُّهَا الْمُرْسَلُونَ
“আমি জানি, তারা যে সব কথা-বার্তা বলে তাতে তোমার মন সংকুচিত হয়। (আল-হিজর ১৫ : ৯৭)
অতঃপর আল্লাহ তা’আলা তার অন্তরকে দৃঢ় করলেন এবং এমন বিষয়ের নির্দেশ প্রদান করলেন, যাতে করে তার অন্তর থেকে ব্যথা-বেদনা দূরীভূত হয়। এ মর্মে আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন,
“(সেই) ঠাট্টা-বিদ্রুপকারীদের বিরুদ্ধে তোমার জন্য আমিই যথেষ্ট। যারা আল্লাহর সাথে অন্যকেও ইলাহ বানিয়ে নিয়েছে, (কাজেই শিরকের পরিণতি কী শীঘ্রই তার জানতে পারবে।” (আল-হিজর ১৫ : ৯৫-৯৬)
আল্লাহ তা’আলা আরো জানিয়ে দিলেন যে, এ অবস্থার শীঘ্রই উন্নতি হবে এবং এ ঠাট্টা-বিদ্রুপ তাদের ক্ষতির কারণ হবে।
কোন মন্তব্য নেই
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু