আল্লাহর কাছে আসার গল্প,

আল্লাহর কাছে আসার গল্প


(লেখিকার পাঠানো লেখা হুবহু তুলে দেওয়া হয়েছে)
আসসালামুআলাইকুম
আমি এখন এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
হেদায়াত প্রাপ্ত হয়েছি ইন্টারে ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষার কিছুদিন আগে।
আমার বাসায় ইসলামি মাইন্ডের বলতে ভাইয়াই একটু ইসলামি হুকুম আহকাম সম্পর্কে সচেতন ছিলেন।
আব্বু আম্মুও ইসলাম মানতো তবে তা নামাজ, রোজা, সত্য কথা বলা, সুদ ঘুষ না খাওয়া এগুলো মানতো। একেবারেও বেইসলামিক ছিলেন।
তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত আম্মুকে পাশে পেয়েছি। কারণ আমি যখন তৃতীয় শ্রেণীতে উঠি তখন আম্মু জবে জয়েন করে। টানা সাত বছর জব করেন আম্মু। যখন আম্মুকে কাছে দরকার তখন আম্মু দূরে ছিল।
এই সাত বছরে আম্মুর অভাব ভাইয়া পূরণ করতো। আম্মুর অভাব কি ভাইয়াকে দিয়ে পূরণ হয়???
আম্মু না থাকায় আর আমি একটা ছোট মেয়ে বলে সবাই খুব আদর করত(এখনো করে)। তখন অতিরিক্ত আদর আর কম শাষনে অনেকটা জেদি টাইপের ছিলাম। কেউ জোরে একটা কথাও বলতো না।
এভাবে চলছিল। যখন পিএসসি পরীক্ষার আগে ভাইয়া একটি ইসলামি সংগঠনে যুক্ত হয়। সেই সুবাদে বাড়িতে অনেক ইসলামি বই এবং হাদীস বই থাকতো। সেগুলো পড়তাম তবে অমনোযোগী হয়ে। তারপর আস্তে আস্তে একটু একটু ইসলামের পথে আসতেছিলাম ভাইয়ার উছিলায়।
৭ম শ্রেণী থেকে বোর্কা পরা শুরু করি।
তারপর হাদীস এবং বড় আপুদের নসিহতে একটু একটু করে ইমপ্রুভ হয়। জেএসসি পরীক্ষার সময় থেকে মুখে নিকাব পরা শুরু করি। আর তখন শুধু ফজরের নামাজ মাঝে মাঝে ৩/৪ ওয়াক্ত নামাজ পড়তাম। ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে রমজানে সব রোজা রাখা শুরু করি।
নবম শ্রেণীতে ফেসবুক আইডি ওপেন করি তখন থেকেই অধঃপতন শুরু হয়।
তখন থেকে ডিজিটাল হেজাব পরতাম।
এসএসসি পরীক্ষার সময় মাথায় উটের কুজের মতো হেজাব করতাম মুখে নিকাব দিতাম না তবে বোর্কা পরতাম।
কলেজে ভর্তির পর শুরু হয় মূল উৎশৃঙ্খলতা। কলেজে থ্রিপিস পরে যেতাম।
বোর্কা পরা একেবারে বাদ দিয়ে দিয়েছিলাম।
দুইটা হেজাব দিয়ে উটের কুঁজের সাইজে হেজাব করতাম।
ইন্টার প্রথম বর্ষ এভাবেই চলছিল।
তখন আম্মু জব করতো না আর। নামাজের জন্য আম্মু চাপ দিত তবে কখনো আমাকে পর্দা করার তাগীদ দেয় নাই।
ইন্টার প্রথম বর্ষে শুধু ফজরের নামাজটাই পড়তাম অন্যগুলো খুব একটা পড়া হতো না।
আমাদের এলাকায় মাদ্রাসার কিছু বড় আপুরা প্রতি শুক্রবারে ছাত্রীদের নিয়ে ইসলামি বিষয় নিয়ে আলোচনা করত।
ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষার আগে আমার এক ফুপি (আমার ছোট) আমাকে ঐ তাফসীর ক্লাসে ডাকতো কিন্তু আমি এই উছিলায় ঐ উছিলায় যেতাম না। এক শুক্রবারে ভাইয়া মেসে থেকে বাসায় এসেছিল সেদিনও ফুপি ডাকতে এসেছিল।

সেইদিনও যেতে না চাইলে ভাইয়া অনেক বকা দিয়েছিলো। ফলে সেইদিন গেলেও পরবর্তী একসপ্তাহে যায় নাই।
তারপরের সপ্তাহে ডাকতে আসলে আম্মু পরীক্ষার কথা বলাই যায় নাই।
তারপরের সপ্তাহে ডাকতে এলে যাওয়া শুরু করলাম(মন থেকে নয়)
এভাবে যেতে ঐ আপুদের প্রোগ্রামগুলো ভালো লাগতে শুরু করল তারপর শত ঝড় বৃষ্টিতেও যেতাম।
তারপর ফেব্রুআরি ২০১৯ থেকে ব্যক্তিগত প্রতিবেদন লেখা শুরু করি।
তারপর থেকে এইতো আস্তে আস্তে দ্বীনের পথে হাঁটা শুরু করি।
মার্চ ২০১৯ থেকে ফেসবুকে মেল ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেয়।
তারপর আমি নিয়মিত কোরআন হাদীস ইসলামি বই পড়া শুরু করি।
নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। শ'রয়ী পর্দা করি।
আম্মুকে নসিহত করে আম্মুও নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। আব্বুও নামাজ পড়ে নিয়মিত।
এখন দ্বীনের পথে চলতে আমাকে সবাই সাহায্য করে আলহামদুলিল্লাহ।

(নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোন)


দ্বীনে ফেরার গল্প শেয়ারের আয়োজক
শামছুন্নাহার রুমি


কোন মন্তব্য নেই

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

konradlew থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.