বারযাখের জীবন সিরিজ: পর্ব ০৪


বারযাখের জীবন সিরিজ: পর্ব ০৪

.

মুমিন কাফির ও গুনাহগার

.
উল্লেখিত হাদীসগুলোতে কেবল মুমিন আর কাফিরের অবস্থা বলা হয়েছে। গুনাহগার মুমিনের কথা বলা হয়নি। ধরে নেওয়া যায় এখানে এমন সব মুমিনদের কথাই বলা হয়েছে যাদের নেক আমলের পাল্লা তাদের বদ আমলের পাল্লার চেয়ে ভারী।
.
আর যেসব মুমিনের গুনাহের পাল্লা নেকির পাল্লার চেয়ে ভারী, তাদের ব্যাপারে বলা যায় হয়তো তাদের কবরে আযাব হবে। হয়তো কিয়ামাতের পর সাময়িকভাবে জাহান্নামেও যাবে। কিন্তু সুন্নাহয় তাদের শাস্তির বর্ণনা বিস্তারিত নেই। তবুও সামনের আলোচনায় গুনাহগারদের বারযাখি জীবন সংক্ষেপে আলোচিত হবে।
.
বারযাখের ব্যাপারে আরো কিছ আয়াত ও হাদীসের সারসংক্ষেপ উল্লেখ করা হলো:
.
মুসনাদ আহমাদে ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত এক হাদীসে আছে মুমিনের রুহ আল্লাহর হামদ ঘোষণা করতে করতে দেহ ত্যাগ করে।
.
মুসলিম ও অন্যান্য কিতাবে উম্মু সালামা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত এক হাদীসে পাওয়া যায় যে, দৃষ্টিশক্তি রুহকে অনুসরণ করে। অর্থাৎ রুহের সাথে সাথে মানুষের দৃষ্টিশক্তিও চলতে থাকে। তার সাথে ঘটা ঘটনাগুলো সে দেখতে পায়।
.
সূরা আনআমের ৯৩ নং আয়াতে সেসব লোকের ব্যাপারে বলা হয়েছে যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করতো অথবা ওয়াহী পাওয়ার মিথ্যা দাবি করতো। মউতের ফেরেশতা হাত বাড়িয়ে তাকে আত্মা বের করার হুকুম দেয় আর অবমাননাকর শাস্তির দুঃসংবাদ শোনায়।
.
কবর যে মৃতকে চাপ দেয়, তা থেকে কেউ রেহাই পাবে না। সকলকেই কবর চাপ দেবে। তবে কিছু আসার থেকে জানা যায় যে সবার ক্ষেত্রে এই চাপের ভয়াবহতা সমান নয়। নেককাররা অল্পতেই পার পেয়ে যাবে। তাবারানিতে উল্লেখিত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণিত এক হাদীসে এসেছে যে কেউ যদি কবরের চাপ থেকে রেহাই পেতো, তিনি হতেন সাদ বিন মুয়াজ। তবে কবর তাঁকে একবার চাপ দিয়েছে। তারপর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
.
কবরের নিকট থেকে লোকেরা চলে যাওয়ার পরই প্রশ্নোত্তর শুরু হয়। মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে আমর বিন আস রাদ্বিয়াল্লাহু মৃত্যুশয্যায় ছিলেন। তিনি অন্য সাহাবাদের বলেন তাঁরা যেন উট জবাই করে তার গোস্ত বিতরণ করতে যত সময় লাগে, ততক্ষণ তাঁর কবরের নিকট দাঁড়ান। এতে তাঁর শান্তি লাগবে এবং তিনি সওয়াল জওয়াবের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারবেন।
.
সূরা ইবরাহীমের ২৭ আয়াতে আল্লাহ বলেছেন যে তিনি মুমিনদেরকে মজবুত কথা দিয়ে মজবুত করেন। এর একটি ব্যাখ্যা হলো মুমিনের কবরের সওয়াল জওয়াব আল্লাহ সহজ করে দেন। বুখারির একটি হাদীস থেকে এ ব্যাখ্যা জানা যায়।
.
কবরের জীবনে দুনিয়ার জীবনের মতই বুদ্ধি বিবেচনা সজীব থাকে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ কথা বলার পর তা শুনে উমার রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, "তাহলে আমি তার (সওয়ালকারী ফেরেশতার) মুখে পাথর ছুঁড়ে মারবো।" (আত তারগিব ওয়াত তাহরিব) এটি একটি আরবি বাচনভঙ্গি যার অর্থ অসাধারণ জবাব দিয়ে চুপ করিয়ে দেওয়া।
.
(চলবে ইনশাআল্লাহ...)
.
সহায়ক গ্রন্থ: আল-হায়াত ফিল বারযাখ (শায়খ মুহাম্মাদ আল-জিবালি)





কোন মন্তব্য নেই

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

konradlew থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.