বারযাখের জীবন সিরিজ: পর্ব ০৩


বারযাখের জীবন সিরিজ: পর্ব ০৩

কুরআন হাদীস থেকে বারযাখের বর্ণনা (চলমান)
.
২। আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে মোটামুটি একই বর্ণনা এসেছে। অতিরিক্ত উল্লেখ আছে যে নেককার ব্যক্তি কবরের সওয়াল জওয়াবের সময় কোনো ভীতি অনুভব করবে না। আর পাপাচারী ব্যক্তি ভীতি অনুভব করবে। যেসব প্রশ্ন করা হবে তার মাঝে অতিরিক্ত উল্লেখ আছে "তুমি আল্লাহকে দেখেছো কি?" নেককার ব্যক্তি বলবে "(দুনিয়ার জীবনে) আল্লাহকে দেখা সম্ভব নয়।" হাদীসটি ইবনে মাজাহ গ্রন্থে আছে।
.
৩। আয়িশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহার কাছে এক ইয়াহুদী ভিখারিনী এসে বলে, "আমাকে কিছু খেতে দাও। আল্লাহ যেন তোমায় দাজ্জালের ফিতনা ও কবরের আযাব থেকে বাঁচান।" রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফিরে এলে আয়িশা তাঁকে ওই ভিখারিনীর বলা কথাগুলো জানান। রাসূলুল্লাহ দাঁড়িয়ে হাত তুলে দাজ্জালের ফিতনা ও কবরের আযাব থেকে বাঁচার দুআ করেন।
.
তারপর আয়িশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহাকে বলেন যে প্রত্যেক নবীই দাজ্জালের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে অতিরিক্ত আরো জানান যে দাজ্জাল এক চোখ কানা হবে অথচ আল্লাহ কানা নন (যেহেতু দাজ্জাল নিজেকে আল্লাহ বলে দাবি করবে) এবং দাজ্জালের দু চোখের মাঝে 'কাফির' লেখা থাকবে যা প্রতিটি মুমিন পড়তে পারবে।
.
তারপর কবরের আযাবের ব্যাপারে পূর্বের হাদীসের মতো মোটামুটি একই বর্ণনা এসেছে। হাদীসটি মুসনাদ আহমাদ গ্রন্থে সংকলিত।
.
৪। আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত আরেকটি হাদীসে অতিরিক্ত এসেছে যে মুমিনের রুহকে আসমানে নেওয়ার সময় পূর্বেকার মুমিনদের রুহের সাথ দেখা করানো হয়। তারা তাকে পেয়ে খুশি হয়। কেউ জিজ্ঞাসা করে "অমুকের কী হয়েছে?" আরেকজন বাধা দেয়, "ওকে বিশ্রাম নিতে দাও। সে তো দুনিয়ার দুঃখ কষ্টে ছিলো।" তবু ওই মুমিন উত্তর দেয়, "সে তো মারা গিয়েছিলো। সে কি তোমাদের নিকট আসেনি?" ফেরেশতারা জবাব দেয় "তাকে এক তলাবিহীন গর্তে (জাহান্নাম) নেওয়া হয়েছে।" ইবনে হিব্বান ও ইবনে মাজাহ গ্রন্থে হাদীসটি আছে।
.
৫। তিরমিযি গ্রন্থে সংকলিত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদীসে আছে যে কবরে সওয়ালকারী ফেরেশতাদ্বয় কালো ও নীল রঙের হবেন। একজনের নাম মুনকার, আরেকজনের নাম নাকির।
.
৬। আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে আছে মৃত ব্যক্তি তার কবরের কাছ থেকে আত্মীয়দের চলে যাওয়ার পদধ্বনি শুনতে পায়। তারপর মুনকার নাকির সওয়াল শুরু করেন। জিজ্ঞাসা করা হয়, "তুমি এই ব্যক্তির ব্যাপারে কী বলতে?" মুমিন জওয়াব দেয়, "আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে তিনি আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।" তার কবরে তখন জান্নাতি নায নিয়ামাত দেওয়া হয়।
.
একই প্রশ্নের উত্তরে কাফির মুনাফিকরা বলে, "লোকে যা বলতো আমিও তা বলতাম। তবে আমার জানা ছিলো না।" তাকে বলা হয়, "তুমি জানতেও না, তুমি (কুরআন) পড়োওনি।" তারপর তার কানের মাঝে মুগুর দিয়ে আঘাত করা হয়। এতে সে এমন এক চিৎকার দেয় যা জিন ও মানুষ ছাড়া সকল প্রাণী শুনতে পায়।" বুখারি, মুসলিম ও আবু দাউদে হাদীসটি আছে।
.
(চলবে ইনশাআল্লাহ...)
.
সহায়ক গ্রন্থ: আল-হায়াত ফিল বারযাখ (শায়খ মুহাম্মাদ আল-জিবালি)






কোন মন্তব্য নেই

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

konradlew থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.