বারজাখের জীবন (পর্ব-২)

বারজাখের জীবন (পর্ব-২)


যখন রুহ আমাদের শরীর থেকে স্থায়ীভাবে বের হয়ে যায় তখন থেকেই শুরু হয় বারজাখ। সুতরাং বারজাখকে ভালো করে বুঝতে হলে প্রথমে  রুহ থেকে আমাদের শুরু করতে হবে।

আত্মা বা এ জাতীয় কিছু যা আমাদের ভেতরে থাকে একে বলে রুহ। রুহ এমন একটি বিষয় যার জ্ঞান শুধুমাত্র আল্লাহর কাছেই রয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের প্রায় কিছুই জানানো হয় নি। এমনকি রসূল সাঃ কেও এ বিষয়ে জ্ঞান দেয়া হয় নি। আমরা অনেকেই জানি রসূল সাঃ কে পরীক্ষা করার জন্য ইহুদিরা মুশরিকদের ৩টি প্রশ্ন শিখিয়ে দিয়েছিলো। তার মধ্যে একটা প্রশ্ন ছিলো রুহ কি?? আসলে ব্যাপারটা ছিলো একটা ট্র্যাপ। কারন ইহুদি পন্ডিতরা জানত, রুহ এমন একটি বিষয়, এ ব্যাপারে আল্লাহ ব্যতীত কারো জ্ঞান নেই। সুতরাং এটা ছিলো রসূল সাঃকে পরীক্ষা করার একটি উপায়। যখন রসূল সাঃ কে প্রশ্ন করা হলো, আল্লাহ আয়াত নাজিল করলেন, "আর আপনাকে তারা রূহ সম্পর্কে প্রশ্ন করে, বলুন, ‘রূহ আমার রবের আদেশঘটিত এবং তোমাদেরকে জ্ঞান দেয়া হয়েছে অতি সামান্যই।" (সূরা বনি-ইসরাইল, ৮৫)। এবং ইহুদীরা বুঝতে পারলেন রসূল সাঃ আসলেই সত্য ও শেষনবী।

এখন প্রশ্ন হলো, রুহ প্রথম কিভাবে মানব শরীরে এলো। পৃথিবীর প্রথম মানব আদম আঃ। আল্লাহ আমাদের কোরআনে জানিয়েছে, তিনি আদম আঃ কে তৈরী করেছেন শুষ্ক ঠনঠনে মাটি থেকে। আল্লাহ আরো বলেন," আমি আদমকে তৈরী করার পর ওতে আমার রুহ ফুকে দিলাম।" উল্লেখ্য #রুহ আল্লাহর সৃষ্ট একটি বস্তু এবং তা কোনভাবেই আল্লাহর কোন অংশ নয়।বরং এখানে "আমার রুহ" বলতে এই রুহটাকে আল্লাহ তার দিকে সম্পর্কিত করে আমাদের সম্মানিত করেছেন।

রুহটা আদম আঃ এর শরীরে কিভাবে ফুকে দেয়া হলো, তা বুখারী, মুসলিম, মুসতাদারাকে হাকেম এর কয়েকটা হাদীসের সারসংক্ষেপ থেকে আমরা জানতে পারি। সেটা সংক্ষেপে এরকম," আল্লাহ আদম আলাইহিস সালামকে শুকনো ঠনঠনে মাটি থেকে তৈরী করে সেখানে রেখে দিলেন। এরপর ইবলিস সেখানে এসে শুকনো প্রাণহীন শরীরকে দেখলো এবং টোকা দিলো। তারপর ইবলিস আদম আঃ এর শরীরের এক ছিদ্র দিয়ে ঢুকে অন্য ছিদ্রদিয়ে বের হয়ে আসলো এবং বললো, আমি এ থেকে উত্তম। এরপর আল্লাহ সুবহানওতায়ালা আদম আঃ এর শরীরে রুহ ফুকে দিতে শুরু করলেন মাথা থেকে নিচের দিকে।রুহ যখন নাক পর্যন্ত আসলো আদম আঃ হাচি দিলেন। এরপর গলায় আসার আগেই আদম আঃ অবচেতন মনেই বলে উঠলেন আলহামদুলিল্লাহ (এটা ছিলো আদম আঃ কে কিছু শেখানোর আগেই তার প্রথম কথা)। এর উত্তরে আল্লাহ পাক বললেন, "ইয়ারহামুকাল্লাহ ইয়া আদম।" এটাই মানুষের সাথে আল্লাহর প্রথম কথা। অতঃপর রুহ নিচ দিকে নামতে লাগলো। রুহ পায়ে যাওয়ার আগেই আদম আঃ দাড়ানোর চেষ্টা করলেন। তখন আল্লাহ বললেন, খুলিকুল ইনসানু মিন আজল" অর্থ্যাৎ, "মানুষ বড়ই ত্বরাপ্রবণ।"

(ইয়াসীর ক্বাদীর লেকচার অবলম্বনে অনুবাদকৃত )
Farzana_haque



কোন মন্তব্য নেই

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

konradlew থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.