বিশেষ দিন/ জন্মদিন/ মেরিজ ডে/



বিশেষ দিন/ জন্মদিন/ মেরিজ ডে/
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••

জন্মদিন সম্পর্কে যতটুকু জানা যায় এর সূচনা কনো মুসলিম থেকে হয়নি। বরং হয়েছে ফেরাউন থেকে। বাইবেলের বুক অব জেনেসিসে এসেছে, “ তৃতীয় দিনটা ছিল ফেরাউনের জন্ম দিন। ফেরাউন তার সব দাসদের জন্য ভোজের আযোজন করলেন। সেই সময়ে ফেরাউন রুটিওয়ালা ও দ্রাক্ষারস পরিবেশককে কারাগার থেকে মুক্তি দিলেন”। (আদি পুস্তক,৪০:২০)আনুমানিক খৃষ্টপূর্ব তিন হাজার পঞ্চাশ থেকে চার হাজার বছর পূর্বের এ ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে।ইহুদী খৃষ্টান হিন্দু বৌদ্ধ সব জাতির মধ্যে এই জন্ম দিন বা বিশেষ দিন পালনের হিড়িক দেখা যায়।
তারা মূলত মুসলিম দের বুঝাচ্ছে যে আনন্দ করার উদ্দেশ্যে যে কোনো অনুষ্ঠান করা যায়। আসলে ভুল দ্বীনের বাইরে গিয়ে যা করবো তাই জাহান্নামের কারণ হবে।মূলত পৌত্তলিক রোমানদের উৎসবের বিপরীতে ক্রিস্টমাস পালন শুরু হয়।মূলকথা বলতে গেলে জন্মদিনের ব্যাপক প্রচলন খৃষ্টানদের মাধ্যমেই ছড়িয়েছে।
জন্মদিন পালনের মূল বিষয়টি যেহেতু বিধর্মীদের থেকে এসেছে তাই বলা যায় এর মূল জিনিসটিই ইসলামে প্রত্যাখ্যাত। তা যে কোন পদ্ধতিতেই হোক।আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
{اتَّبِعُوا مَا أُنْزِلَ إِلَيْكُمْ مِنْ رَبِّكُمْ وَلَا تَتَّبِعُوا مِنْ دُونِهِ أَوْلِيَاءَ قَلِيلًا مَا تَذَكَّرُونَ } [الأعراف : 3]
👉তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষথেকে যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তার অনুসরণ কর। তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য সাথিদের অনুসরণ করনা।তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ কর। (সূরা আ’রাফঃ৩)
{ثُمَّ جَعَلْنَاكَ عَلَى شَرِيعَةٍ مِنَ الْأَمْرِ فَاتَّبِعْهَا وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَ الَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ } [الجاثية : 18]
👉এরপর আমি আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করেছি দ্বীনের বিশেষ বিধানের উপরঃ সুতরাং আপনি এর অনুসরণ করুন, মূর্খদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করবেননা।(সূরা যাসিয়াঃ১৮)
এখন কেউ যদি বলে আমি জন্মদিন হিসেবে শুকরিয়া স্বরূপ কিছু আমল করবো তাহলে এই ব্যাপারে কথা হলো,ইসলামে যে বিষয়টি নেই তা ইসলামের অন্তর্ভুক্ত করা বিদআত। যা প্রত্যাখ্যাত। হাদীস শরীফে এসেছে –
👉হযরত আয়েশা রাযি. হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কেউ আমাদের এ শরীয়তে সংগত নয় এমন কিছুর অনুপ্রবেশ ঘটালে তা প্রত্যাখ্যান করা হবে।(সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৫৫০, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৪৫৮৯)
👉হযরত যাবের ইব্ন আব্দুল্লাহ রাযি. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুতবার মাঝে বলতেন, যাকে আল্লাহ হেদায়াত দেন তাকে ভ্রষ্টকারী কেউ নেই।আর যাকে পথভ্রষ্টকরেন তার জন্য হেদায়াত কারী কেউ নাই। নিশ্চয়ই সবচেয়ে খাটি কথা হল আল্লাহর কিতাব ও সর্বোত্তম দিশারী হল মুহাম্মাদ সা এর সুন্নাত এবং সর্ব নিকৃষ্ট কর্মহল (দ্বীনের মাঝে) নতুন কিছু উদ্ভাবন করা। প্রত্যেক নতুন উদ্ভাবিত বিষয়ই বিদআত; প্রত্যেক বিদআতই ভ্রষ্টতা আর প্রত্যেক ভ্রষ্টতাই জাহান্নামী।(সুনানে নাসাঈঃ১৫৭৭)
অনেকে আবার বলেন জন্ম দিন বিশেষ আমল করবো,বা গরীব দের খাওয়াবো বা মাদ্রাসা এতিমখানায় দিচ্ছি। সেক্ষেত্রে কেউ আমল করার জন্য এক বছর অপেক্ষা করুক এটা ইসলাম কামনা করে না। নির্দিষ্ট কোন দিনের জন্য আমলকে বাচিয়ে রাখা ইসলামের কর্মপন্থার বিরোধী। বরং নিয়মিত আমল স্বল্প হলেও আল্লাহর কাছে অধিক পছন্দ। এ ব্যপারে হাদীসে শরীফে এসেছে
👉হযরত আয়েশা রাযি. হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তায়ালার নিকট পছন্দনীয় আমল হচ্ছে নিয়মিত আমল, চাই তা কম হোকনা কেন।(সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬০৯৯, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৮৩)।
মনে রাখতে হবে আমাদের যে কোন প্রকার দিবস পালন করাই শির্ক। কেননা তার দ্বারা ঐ দিনটাকে পূজা করা হয়। এই সমস্ত দিবস পালনের মাধ্যমে কল্যাণ কামনা করা হয়। আর সমস্ত কল্যাণের মালিক একমাত্র মহান রাব্বুল আলামীন। তাই মহান রাব্বুল আলামীন যা নির্ধারণ করেন নি কেউ যদি কোন দিনকে এভাবে পালন করে তবে শির্ক হবে।
👉 নবী (সাঃ) বলেন- অশুভ আলামত বা দুর্ভাগ্যের ধারণা যে ব্যক্তিকে তার স্বীয় প্রয়োজন, দায়িত্ব ও কর্তব্য থেকে দূরে রাখল সে মূলত শির্ক করল। (মুসনাদে আহমাদঃ ২/২২০)
আর যদি কেউ বলে- কল্যাণ কামনার জন্য আমরা এই সমস্ত দিবস পালন করি না। শুধু একটু উৎসবের জন্য করি। তাদের কে বলেছি যে ইসলাম উৎসব এর দিন নির্ধারিত। আর তাহলে তাদের নিকটে প্রশ্ন- কেন তাহলে এই সমস্ত দিবস পালন করেন?? একটাই উত্তর আসবে- বিজাতীয় সংস্কৃতি দেখে তাদের অনুকরন করে।
এই ধরণের যত প্রকার দিবস রয়েছে সেগুলোর কোনটাই মুসলিমদের সংস্কৃতি নয়।
যদি এগুলো মুসলিমদের সংস্কৃতি হত তবে এগুলো সাহাবাদের যুগ থেকেই পালিত হয়ে আসতো। তাই যেহেতু এগুলো মুসলিমদের সংস্কৃতি নয় তাহলে বুঝাই যাচ্ছে যে এগুলো কাফের-মুশরিক বিজাতীয়দের সংস্কৃতি থেকে এসেছে।
আর এ প্রসঙ্গে রাসূল ﷺ বলেছেন,

👉‘যে ব্যক্তি যে জাতির অনুকরণ করবে, সে ব্যক্তি সেই জাতিরই একজন বলে গণ্য হবে’ ( আবূ দাঊদ হা/৪০৩১) ।
👉আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস রাঃ থেকে বর্ণিত রাসূল সাঃ বলেছেন, যে ব্যক্তি মুশরিকদের দেশে বাড়ী তৈরি করল তাদের উৎসব দিবস পালন করল এবং এ অবস্থায় মারা গেল তবে তার হাশর তাদের সাথেই হবে। (সূনানে বাইহাকীঃ ২৩৪)
কেউ যদি কারো জন্মের দিনটিকে তার বিশেষ দিন মনে করে তাহলে তা ইহুদি ও মুশরেকদের বিশ্বাসের সাথে মিলে যায়। কেননা তাদের কাছেও কারো জন্ম গ্রহনের দিনটি তার জন্য বিশেষ একটি দিন ।আর রাসূল সা. ইহুদী ও মুশরেকদের সাথে সাদৃশ্য পছন্দ করতেন না তাই কখনো তাদের বিপরিত আমল করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাই কোন মুসলিমের জন্য উচিত হবেনা জন্মদিনের মত অহেতুক একটি কাজ করে ইহুদি ও মুশরেকদের সাদৃশ্য অবলম্বন করে তাদের দলভুক্ত হওয়া। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে দ্বীনের উপর চলা সহজ করে দিন।
তাই আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বিজাতীয়দের সংস্কৃতি বর্জন করা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য ওয়াজিব।
অতএব মুসলিমরা যদি জান্নাতের আশা করে এবং জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচতে চায় তবে তারা আল্লাহ্‌ এবং তাঁর রাসুলের দিকে ফিরে আসুক।।
__________________
F A Amatullah

কোন মন্তব্য নেই

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

konradlew থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.