কিয়ামত

🌘 কিয়ামত


পবিত্র কোরআনে কয়েকটি বিষয় বিশেষ জোর দেওয়া দেওয়া হয়েছে। কয়েক পৃষ্ঠা পর পরি ই সে কথা গুলু আমাদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে এর মধ্যে একটি বিষয় হচ্ছে কিয়ামতের দিবস।কোরআন পড়লে আমাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে আল্লাহ এত ঘন ঘন এই দিনটির কথা কেনো বলেছেন।সে প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যায় নিজেদের দিকে তাকালে।যে দিনটি হবে মানব জাতির জন্য সবচেয়ে কঠিন দিন,যেদিন ক্ষুদ্রতম বিষয়গুলু ও মেপে দেখা হবে, ফায়সালা করা হবে।সেদিনটি নিয়ে আমরা কতটুকু ভাবার সময় পাই?বাস্তবতা হচ্ছে শেষ যামানায় বাস করছি কেয়ামত ঘনিয়ে আসছে।রাসূল সাঃ বিভিন্ন হাদীসে কিয়ামতের কিছু আলামতের কথা উল্লেখ করেছেন।উলামারা এই আলামত গুলো কে দুই ভাগে ভাগ করেন। বড় ও ছোট।
ছোট আলামত অনেক রয়েছে।যার মধ্যে অন্যতম হলো রাসূল সাঃ এর মৃত্যু।চৌদ্দশ বছর আগে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা যখন কেয়ামতের একটি সুস্পষ্ট নিদর্শন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে আমরা বুঝতে পারি আমরা কিয়ামতের কত কাছে চলে এসেছি।এছাড়া রাসূল সাঃ আরো অনেক গুলো চিহ্ন উল্লেখ করেছেন যার মধ্যে রয়েছে

অভাবী বেদুইন রা উঁচু অট্টালিকা বানানোর প্রতিযোগিতা করবে।
মানুষের মধ্যে পরস্পরের বিশ্বাস ওটে যাবে।
সুদ এমনভাবে বৃদ্ধি পাবে,যে কোনো ব্যাক্তি এর হতে পুরোপুরি মুক্ত হতে পারবেনা।
মদ্যপান বেড়ে যাবে।
যিনা বেড়ে যাবে।
ভূমিকম্প বেড়ে যাবে।
হত্যাকাণ্ড এমনভাবে বৃদ্ধি পাবে ,যেই ব্যাক্তি হত্যা করছে এবং যাকে হত্যা করা হচ্ছে দু জনের একজন ও জানবে না হত্যার উদ্দেশ্য টা আসলে কি,,,
নারীরা কাপড় পরিধান করা সত্বেও বিবস্ত্র হবে।
মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার প্রচলন থাকবে।
জন্তু জানোয়ারেরা এবং নিষ্প্রাণ বস্তু মানুষের সাথে কথা বলবে।
এবং সবচেয়ে নিম্ন স্তরের লোকেরা সমাজে নেতা হয়ে যাবে।
এছাড়া কিয়ামতের আরো অনেক ছোট আলামত আমরা বিভিন্ন হাদীসে পেয়ে থাকি কিন্তু কিয়ামতের বড় আলামত গুলো হচ্ছে দশটি।
মানবজাতির জন্য কিয়ামতের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর আলামত এমনকি মানব ইতিহাসের কঠিন ফেৎনা হবে দাজ্জাল।
দাজ্জাল চল্লিশ দিন পৃথিবীতে রাজত্ব করবে।
এর মধ্যে প্রথম দিনটি মনে হবে এক বছরের সমান।
দ্বিতীয় দিনটি মনে হবে এক মাসের সমান।
তৃতীয় দিনটি মনে হবে এক সপ্তাহের সমান।
এবং বাকি দিনগুলো সাধারণ দিনের মতোই মনে হবে।
যদি ও শুনলে চল্লিশ দিন খুব বেশি মনে হয় না,বাস্তবে দাজ্জাল হবে প্রতিটি মোমিনের জন্য সবচেয়ে বড় ফেৎনা।
আল্লাহ আজ্জাওয়াজাল দাজ্জালকে এমন সব শক্তি দিবে,যে প্রকৃত ঈমানদার ছাড়া অন্যকেউ তার আহ্বান অগ্রাহ্য করতে পারবেনা।
তাই রাসূল সাঃ আমাদেরকে দাজ্জালের ফেৎনা থেকে রেহাই পাওয়ার দোআ শিখিয়েছেন।এবং আরো বলেছেন যে ব্যাক্তি সূরা কাহাফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্ত করবে সেটা তাকে দাজ্জালের ফেৎনা থেকে রক্ষা করবে।
এরপর,,,ঈসা আ:পৃথিবীতে ফিরে আসবেন।তিনি সুশাসন প্রতিষ্টা করবেন।শিরক ধ্বংস করবেন।এবং ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করবেন সেই সাথে তিনি দাজ্জালের সাতে যুদ্ধ করে তাকে হত্যা করবেন।
এরপরে ইয়াজুজ এবং মাজুজ পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে।এবং ঈসা আ:তাদের বিরুদ্ধে কঠিন যুদ্ধে লিপ্ত হবেন এবং অবশেষে তাদের ধ্বংস করবেন।এরপর ঈসা আঃ শান্তিপূর্ণ অবস্থা প্রতিষ্ঠিত করবেন এবং মৃত্যুবরণ করবেন।
কিয়ামতের আগে কিছু বড় ধরনের প্রাকৃতিক নিদর্শন দেখা যাবে।সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদয় হবে।তিনটি প্রকান্ড ভূমিকম্প হবে,এর একটি হবে পূর্বাঞ্চলে একটি পশ্চিমে এবং আরেকটি আরব অঞ্চলে
আরেকটি প্রাকৃতিক আলামত হবে চল্লিশ দিনের জন্য একটি গাঢ়ো ধুয়াই গোটা পৃথিবী ছেয়ে যাবে।এতে বিশ্বাসী অবং অবিশ্বাসী নির্বিশেষে প্রত্যেককে আক্রান্ত হবে।
আরেকটি বড় নিদর্শন হলো দানবের আগমণ।এবং সেই দানব মাটি থেকে ওটে আসবে।তাকে আল্লাহ কথা বলার ক্ষমতা দিবেন।এবং সে মোমিন এবং অবিশ্বাসীদের চিহ্নিত করে দিবে।
কিয়ামতের আগের সব ও শেষ আলামত হচ্ছে ইয়েমেন অঞ্চল থেকে এক প্রকান্ড আগুন শুরু হবে যা ছড়িয়ে পড়বে পৃথিবী জুড়ে।এই আগুন পৃথিবীতে অবশিষ্ট সকল মানুষকে একটি প্রান্তরে নিয়ে আসবে।
এই শেষ নিদর্শনের পর আরম্ভ হবে কিয়ামত💣
কিয়ামত শুরু হবে হটাৎ করে।
যারা কোনো বিষয় আলোচনা করছিল তারা তাদের আলোচনা শেষ করার ও সময় পাবেনা।
কেউ কারো পরিবার পরিজনদের সতর্ক করার সুযোগ পাবে না।
যে দুজন ব্যাক্তি কোনো লেনদেন করছিল তারা তাদের লেনদেন শেষ করার সুযোগ পাবে না।
যে ব্যাক্তি ঘরে দুধ নিয়ে যাচ্ছিল সে সেই দুধের স্বাদ পাবে না।
যে ব্যাক্তি মুখে খাবার তুলছিলো সে সেই খাবার মুখে দিতে পারবে না।
হটাৎ করে ইসরাফিল আ:এর সিঙ্গার শব্দে আরম্ভ হয়ে যাবে কিয়ামত।
এই শব্দের সাথে সাথে আসমান এবং জমিনের প্রতিটি সৃষ্টি মৃত্যুবরণ করবে।
গোটা আকাশমন্ডলী বিস্ফোরিত হবে।
পাহাড় পর্বত ধসে পড়বে।
সমুদ্র গুলু প্রজ্জ্বলিত হবে।
আমরা মহাবিশ্ব বলতে যা বুঝি তা সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত হয়ে যাবে।
এরপর,,,,,
আল্লাহ তার চারজন অবশিষ্ট পবিত্র ফেরেশতা কে জড়ো করবেন।জিব্রাইল আ:,মিকাঈল আ:, ইস্রাফিল আ:এবং মালাকুল মউত।আল্লাহ মালাকুল মউত কে বলবেন একে একে মিকাঈল আ: ইস্রাফিল আ: এবং সব শেষে জিব্রাইল আ:এর রূহ নিয়ে নিতে।পরিশেষে আল্লাহ মালাকুল মউত কে হুকুম করবেন মৃত্যুবরণ করার জন্য।
এবং স্বয়ং মালাকুল মউত মৃত্যুবরণ করবে।

এরপর,,,,,,,,,,,
আল্লাহ্ নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করবেন
আজকে সব কতৃত্ব কার জন্য?????
তাকে উত্তর দেওয়ার জন্য কেউ থাকবেনা।
তখন তিনি নিজেই নিজেকে উত্তর দিবেন
লিল্লাহিল ওয়াহিদিল কাহার।(আল্লাহর জন্য।)যিনি এক মহাপরাক্রান্ত।
আল্লাহ তার অসীম জ্ঞান অনুযায়ী বিচার দিবসের জন্য পৃথিবীকে এক প্রকান্ড সমতল ভূমিতে পরিণত করবেন।যদি ও সে ভূমি হবে বিরাট, বিচার দিবসের দিন সেখানে জড়ো হবে সময়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জন্ম নেওয়া প্রতিটা মানুষ , জ্বিন ও জীব জন্তু।তাই সে পুরো ভুমিটি ভরপুর হয়ে যাবে।সেই সমতল ভূমিতে গেঁথে আছে হাজার হাজার বছর ধরে কবর দিয়ে আসা মরদেহ গুলুর মেরুদণ্ডের একটি ক্ষুদ্র কণা।আল্লাহ সে ভূমিতে বিশেষ এক বৃষ্টি পাঠিয়ে দিবেন,সেই বৃষ্টির পানি পেয়ে প্রাচীন সে দেহগুলুর নিশ্চিহ্ন প্রায় অবশিষ্ট অংশ থেকে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠবে এক নতুন দেহ। বার্যাখের
জীবনে গুমন্ত আত্তা জেগে উঠবে এই নতুন শরীরে।আবার ও শিঙ্গায় ফু দেওয়া হলো কারণ ততক্ষণে ফেরেস্তাদের পুনরুজ্জীবিত করা হয়ে গেছে।আবার ও এক প্রকান্ড শব্দে কেপে উটবে এই নতুন সমতল পৃথিবী।সে কম্পনের সাথে সাথে আপনি হাত পা ছুড়ে বেরিয়ে আসবেন মাটি থেকে।চোখ মুখ থেকে ধুলা মুছে আপনি চারিদিকে তাকাচ্ছেন অনেক অনেক গভীর ঘুম থেকে ওঠে সব কিছু নতুন লাগছে,সবকিছু আশ্চর্যজনক লাগছে।আপনার চারিপাশে অগণিত মানুষের ভীড়।মানুষ, জ্বিন,পশু পাখি,ফেরেস্তা চারিদিকে ছোটাছুটি,,আপনি ও বাকিদের সাথে ছুটতে শুরু করেন।

🌫️🌫️🌗 বুঝতে পারেন বিচার দিবস শুরু হয়ে গেছে।🌘

কোন মন্তব্য নেই

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

konradlew থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.