সর্ববৃহৎ শাফাআত এবং হিসাব

সর্ববৃহৎ শাফাআত এবং হিসাব


দিবসের দৈর্ঘ্য 50 হাজার বছরের সমান ।আগের আলোচনায় বলা হয়েছিল সেদিন সময় একেক মানুষের জন্য একেক গতিতে চলবে।
বর্তমান জীবনে ও এরএকটা আঁচ পাওয়া যায় ।আনন্দময় সময় গুলো মনে হয় চোখের পলকে পার হয়ে গেল আর কষ্টের সময় গুলোকে মনে হয় খুব ধীরগতিতে চলছে।
কেয়ামতের দিবসে এই পার্থক্যগুলো হয়ে যাবে বহুগুণে বেশি।আপনি দাড়িয়ে আছেন হাশরের ময়দানে ।সবাই অপেক্ষা করছে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার জন্য কিন্তু তা হচ্ছে না ।এই দাঁড়িয়ে থাকা কে অনেকের কাছে তাদের গোটা অস্তিত্বের সবচেয়ে বড় শাস্তি মনে হতে থাকে।
যারা আল্লাহকে অবিশ্বাস করেছিল তাঁর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অস্বীকার করেছিল তারাও আর দাঁড়িয়ে থাকতে চাচ্ছে না যদিও তারা অনুধাবন করতে পারছে তাদের জন্য জাহান্নাম অপেক্ষা করছে তারপরও তারা চাচ্ছে আল্লাহ যেন বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে দেন এরপর যা হবার হবে ।কিন্তু এভাবে দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব হচ্ছেনা।
মানবজাতি জিন জাতি সহ গোটা সৃষ্টি একত্র হয়ে ছুটে যায় আল্লাহর সৃষ্টি করা প্রথম মানুষটির কাছে আদম আলাইহিস সালাম এর কাছে, ঝড়ো হয়ে বলে হে আমাদের পিতা আল্লাহ নিজ হাতে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন আপনি আল্লাহর কাছে শেফায়াত করুন সুপারিশ করুন তিনি যেন বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে দেন।
আপনি নিজেই সেই ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন তবুও চমকে না গিয়ে পারলেন না। দুনিয়ার জীবনে হাজার হাজার বছর ধরে বিভক্ত হওয়া মানুষ আজ এক হয়ে গেছে এক সুরে একটাই দাবি করছে তারা জান্নাত চাইছে না ক্ষমা ও চাইছে না তারা চাচ্ছে এই অনিশ্চয়তা থেকে পরিত্রান।এই অসহনীয় অপেক্ষার অবসান।
আপনার কাছে যদিও মনে হচ্ছে সবকিছু বেশ তাড়াতাড়ি আগাচ্ছে।আপনি বুঝতে পারেন অনেকের কাছে হয়ত মনে হচ্ছে তারা হাজার হাজার বছর ধরে শুধু দাঁড়িয়ে আছে। আদম আলাই সালাম সকলের আবেদন শুনলেন। প্রত্যেকটি মানুষই তার সন্তান। নিজ সন্তানদের আকুল আবেদন শোনার পরেও তিনি তাদের কথায় রাজি হতে পারলেন না। তিনি সেদিন বহু বছর আগে তার করা একটি ভুলের কথা চিন্তা করছিলেন। যে ভুলের কারণে তিনি জান্নাত থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। যে ভুলের শাস্তি তিনি পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি জানেন আজ বিচার দিবসে আল্লাহ অত্যন্ত রেগে আছেন ।তাই তিনি তার সেই একটি ভুল নিয়ে এত চিন্তিত যে তার সন্তানদের ফিরিয়ে দিয়ে বললেন আমি এই কাজ করতে পারবো না। তোমরা অন্য কারো কাছে যাও। তোমরা নূহের কাছে যাও।
গোটা মানবজাতি তখন নূহ আলাইহিস সালামকে খুঁজে বের করে। তার কাছে গিয়ে একই আবদার করে আল্লাহর কাছে যেন তিনি একটু সুপারিশ করেন বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য। কিন্তু আদম আলাইহিস সালামের এর মত নূহ আলাইহিস সালাম ও সেদিন নিজের পরিণতি নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি তাদের ফিরিয়ে দিলেন।
এভাবে করে গোটা সৃষ্টি এক নবীর কাছ থেকে আরেক নবীর কাছে যেতে থাকে, একই অনুরোধ করতে থাকে।কোনো নবী বাকি থাকে না।ইব্রাহিম আলাইহিসালাম ,মূসা আলাইহিস সালাম,ঈসা আলাইহিস সালাম ও তাদের ফিরিয়ে দিলেন।
অবশেষে সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি মানুষ ও জ্বিন ঝড়ো হয় মহাবিশ্বের জন্য রহমত হিসেবে প্রেরিত মুহাম্মদ ইবেনে আবদুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে।তার কাছে গিয়ে সবাই মিলে অনুরোধ করতে থাকে।হে আল্লাহর হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম,হে আল্লাহর প্রেরিত শেষ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের এই সংকট থেকে আপনি উদ্ধার করুন আল্লাহর কাছে শাফায়াত করুন সুপারিশ করুন তিনি যেন বিচারপ্রক্রিয়া আরম্ভ করে দেয়। সূর্যের ন্যায় উজ্জ্বল মুখমন্ডল টির দিকে আরেকটিবার আপনার তাকানোর সুযোগ হলো। তার দিকে তাকিয়েই মনের মধ্যে এক ধরনের স্বস্তি ছড়িয়ে পড়ল। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবার দিকে তাকালেন এবং তার অন্তর জুড়ানো কন্ঠে সবাইকে আশ্বস্ত করে বললেন আনা লাহা,আনা লাহা।এটা আমারি কাজ ,এটা আমারি কাজ।এটাই হচ্ছে সে মাকামে মাহমুদ সেই প্রশংসিত স্থান যা রাসূল সাঃ কে দেয়ার অঙ্গীকার করা হয়েছিল ।যখন গোটা সৃষ্টি বিচার দিবসের সেই চরম সংকটময় অবস্থায় থাকবে একমাত্র তাঁরই অনুমতি থাকবে পুরো মানবজাতির ও জ্বিন জাতির হয়ে আল্লাহর কাছে সুপারিশ করার।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর সামনে এবং সেখানে সেজদায় মাথানত করলেন ।এবং আল্লাহকে এমন নামে এমন ভাষায় প্রশংসা করা শুরু করলেন যে আগে কখনো নাযিল করা হয়নি। তিনি তার রবকে ডাকছেন পুরো মানবজাতির জন্য তার অন্তরকে উজাড় করে তিনি তার রবকে ডাকছেন ।এবং এমনি করে কতটুকু সময় পার হয়ে গেল কারো হিসেব থাকলো না ।
কিয়ামতের শুরু থেকে আল্লাহ অত্যন্ত রেগে ছিলেন।গোটা মানবজাতি ও জ্বীন জাতি দুনিয়ার জীবনে বারবার তাকে অমান্য করেছে তিনি বারবার তাঁদের ক্ষমা করেছেন। আহ্বান করেছেন তবুও তারা বারবার তার ডাক অগ্রাহ্য করেছে করে পৃথিবীতে দুর্নীতি করে গেছে। হাজার হাজার বছর ধরে তার কোটি কোটি বান্দা এইরূপ আচরণ করে গেছে। আজ তার রাগ কল্পনার বাইরে তিনি এতটাই নিরাশ যে মানবজাতির সংকট পূর্ণ মুহূর্তে ও তিনি তাদের উদ্দেশ্যে একটি কথা বলছেন না
এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতেও যখন তার হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহিওসাল্লাম মাটিতে কপাল টুকে তার প্রশংসা করতে থাকেন তাকে ব্যাকুল হয়ে ডাকতে থাকেন তাঁর সৃষ্টি করা শ্রেষ্ঠ এই বান্দার প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও রহমতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার ডাকে সাড়া না দিয়ে থাকতে পারলেন না। তার প্রিয় বান্দার ডাক দিলে কি করে উপেক্ষা করেন?
তিনি নবীজী সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে উদ্দেশ্য করে বলেন...ইয়া মুহাম্মাদ ,ইরফা রাজ্জাক হে মোহাম্মদ তোমার মাথা ওটাও।ওয়াজাল তোয়ারতা এবং যা চাও তোমাকে দেয়া হবে । উয়াশেফাতু শেফায়া সুপারিশ করো তোমার সুপারিশ কবুল করা হবে। ।কেয়ামত দিবসে রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম কয়েকটি শাফায়াতের এর কথা বর্ণনা করা আছে কিন্তু মূলত শেফায়াতুল কোবরা বা সর্ববৃহৎ শেফা বলতে আমরা যা বুঝি তা হলো এই সুপারিশ টি যার কারণে আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করবেন।
আল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুপারিশ গ্রহণ করলেন বিচার প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে। হাশরের ময়দানে সবাই অপেক্ষা করতে থাকে মহাবিশ্বের রব আল্লাহ অজ্জাওজালার জন্যে
এক প্রকান্ড শব্দে আকাশ মন্ডলী উন্মুক্ত হয়ে যায় ।অলৌকিক মেয়ে ধেয়ে আসে ।এবং অগণিত ফেরেশতা নেমে আসে ।এবং সেই ফেরেশতারা সব মানুষদের জায়গা করে নেয় এবং তারা একত্র হয়ে আল্লাহর প্রশংসা করতে থাকে তার মাহাত্ম্য বর্ণনা করতে থাকে ।তাদের যিকিরের উদ্দীপনা দেখে সবাই জিজ্ঞেস করে আল্লাহ কি এসে গেছেন? তারা বলে না ,,,তিনি আসছেন ।এবং এরপর ,,,,,,,
স্বয়ং আল্লাহ তাআলা হাশরের ময়দানে উপস্থিত হন।
এবং তিনি কিভাবে আসেন কতটুকু কাছে আসেন এসব বিষয়ে আমরা বিস্তারিত জানি না ।এবং তা কল্পনা করাও সম্ভব নয়। তিনি তো সব ধরনের কল্পনার ঊর্ধ্বে।
কিন্তু তার আগমনের ব্যাপারে কিছু তথ্য আমাদেরকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানিয়েছেন বটে। যখন আকাশ মন্ডলী উন্মুক্ত হয়ে সারি সারি ফেরেশতা নেমে আসবে এরপর আল্লাহর আরশ বহনকারী ফেরেশতা আল্লাহর আরশ বহন করে নেমে আসবে
সর্বমোট আট জন ফেরেশতা সেদিন আল্লাহর আরশ বহন করবেন। প্রথমে সংখ্যা টাকে অল্প মনে হতে পারে। কোটি কোটি ফেরেস্তার ভিড়ে আল্লাহর আরশ মাত্র আট জন ফেরেশতা বহন করবে ?কিন্তু বাস্তবে এই ফেরেশতারা অন্যদের মতো নয় ।রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বর্ণনা করে বলেন আল্লাহর আরশ বহনকারী একজন ফেরেশতা পা হচ্ছে সপ্তম জমিনে এবং তার মাথা হচ্ছে সপ্তম আসমানে ।তার কানের লতি থেকে কাধেঁর দূরত্ব পাড়ি দিতে একটি পাখিকে 700 বছর ভ্রমণ করতে হবে ।এমন একজন ফেরেশতা কল্পনা করাও আমাদের জন্য কঠিন ।আমাদের আকাশের গ্রহ-নক্ষত্রের একত্র করলে হয়তো এমন ফেরেশতার সমান হবে না ।এবার ভেবে দেখুন এমন প্রকান্ড আকারের আট জন ফেরেশতা আল্লাহ রব্বুল আলামীনের আরশ বহন করে হাশরের ময়দানে পৌঁছবেন।
এবং আল্লাহর আগমনের পর শুরু হবে হিসাব নেয়ার পর্ব ।কিয়ামতের দিন হিসাব হবে তিন ধরনের। প্রথম দলকে কোন হিসাব কোনো আযাব ছাড়াই সরাসরি জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। বোখারী হাদীসে বর্ণিত আছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বলেন তাঁর উম্মত থেকে 70 হাজার মানুষ কোন প্রকার হিসাব ছাড়া জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের মুখমণ্ডল চাঁদের মত উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। যদিও 70000 শুনলে খুব বেশি মনে হয় না কিন্তু সকল মুমিন ব্যক্তি দের জন্য সুখবর রয়েছে ।তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ কিতাবে হাদীসে বর্ণিত আছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাম আরও বলেন আমার রব আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমার উম্মত থেকে 70,000 বান্দা সরাসরি জান্নাতে প্রবেশ করবে কোন প্রকার হিসাব বা আযাব ছাড়া।এবং তাদের মধ্যে প্রতি 1000 বান্দার সাথে আরো 70 হাজার মানুষ যোগ হবে অর্থাৎ সবমিলিয়ে 49 লক্ষ্য মুমিন বান্দা সরাসরি জান্নাতে প্রবেশ করবে কোন প্রকার হিসাব ছাড়া ।এবং শুধু তাই নয় ওই হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন এরপর আল্লাহ তাআলা তিনবার তার নিজ হাতের মুঠো ভরে তার বান্দাদের কোন হিসাব ছাড়া সরাসরি জান্নাতে প্রবেশ করাবেন ।যে রবের আরশ এই পুরো মহাবিশ্ব থেকে অসংখ্য গুণে বড় সে রবের হাত ভরপুর হলে কত অগণিত মোমিন বান্দা সরাসরি জান্নাতে প্রবেশ করবে তা আমাদের কল্পনার বাইরে ।আমরা শুধু এই আশাই করি যে আমরা প্রত্যেকে যেন সে দলের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়। পরম করুণাময় আল্লাহ যেন আমাদের উপর দয়া করে আমাদের কোন প্রকার হিসাব না নেন।
আমার ভাই এবং বোনেরা এই বিষয়ে আপনাদের কাছে বিশেষভাবে জোর দিতে চাই ,,,,,,,
সেদিন লক্ষ লক্ষ হইতো কোটি কোটি মুমিন বান্দা কোন প্রকার হিসাব ছাড়া সরাসরি জান্নাতে প্রবেশ করবে ।এই বান্দাদের মধ্যে হইতো অনেক ব্যাভিচারী,অনেক সুদখোর,অনেক জালিম ব্যাক্তি ও থাকবে।যারা তাদের ভুল বুঝতে পেরে আল্লাহর কাছে ফিরে এসেছিল কাল্বান যালিম বা বিশুদ্ধ অন্তর নিয়ে।
আমাদের প্রত্যেকের পাপের সংখ্যা অজস্র এবং প্রত্যেকটি গুরুতর ।কিন্তু আমরা যেন সেই কারণে আল্লাহর কাছ থেকে চাইতে লজ্জা না পাই। কারণ আল্লাহর কাছ থেকে চাইতে লজ্জা করা মানে তাঁর ক্ষমা কে ছোট করে দেখা।তার রহমত কে ছোট করে দেখা।আমরা যেন সেদিন এই কারণে এই শ্রেষ্ঠ দলের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে বঞ্চিত না হয়, যে আমরা আল্লাহর ক্ষমার উপর হতাশ হয়ে সরাসরি জান্নাত লাভের জন্য দো'আ করিনি ।আমরা যেন প্রত্যেকে আল্লাহর কাছে শ্রেষ্ঠ এই দলটির অংশ হওয়ার জন্য দোয়া করি।
আমি চোখের যিনা করে থাকলেও ,আমি শুধু চাকরি করে থাকলেও, আমি মদ্যপান করে থাকলেও, হয়তো এই দুয়ার কারণে আমি শীঘ্রই এই পাপ গুলু থেকে ফিরে আসতে পারবো। এবং সেদিন কোন প্রকার হিসাব কোন প্রকার আযাব ছাড়া জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব ।আল্লাহ তা'আলা আমাদের সবাইকে সেই দলের অন্তর্ভুক্ত করুন। আমীন ।
সর্বোত্তম এই পরিণতির পর রয়েছে দুটি দল একদল লোকের জন্য রয়েছে হিসাবুন নাসির। তাদের জন্য রয়েছে সহজ হিসাব ।এবং এটাও হবে মুমিন বান্দাদের জন্য ।কিন্তু সেই বান্দারা যারা হিসাব ছাড়া জান্নাতে প্রবেশ করার দলের মধ্যে ছিল না। এই দলের বান্দাকে আল্লাহ তার জ্ঞান তার নেয়ামত এবং তার কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। এবং সেগুলো কিভাবে কাজে লাগিয়েছিল তা জানতে চাইবেন। সে তখন বিভিন্ন ধরনের ভালো কাজের কথা উল্লেখ করতে পারবে। এবং সে যত ভালো কাজের কথা উল্লেখ করতে থাকে সেই প্রশ্নোত্তর পর্ব তার জন্য ততো সহজ হতে থাকে। এবং সেই মুহূর্তেই আল্লাহর রহমত বর্ষিত হতে থাকে। এবং এরপর আল্লাহ তাকে আলাদা করে নিবেন। এবং তাকে দেখাবেন এবং তার পাপ গুলো দেখার পরে সে আল্লাহর সামনে অত্যন্ত লজ্জিত বোধ করবে ।তীব্র অনুশোচনাবোধ করবে ।কিন্তু এরপর আল্লাহ তার পাপ গুলো ক্ষমা করে দেবেন ।এবং সেই পাপ গুলো সম্পর্কে আর কেউ জানবে না। এবং বলে রাখা ভালো এ কারণে উলামারা পরামর্শ দেন কেউ গোপনে কোন পাপ কাজ করে থাকলে সে যেন সেটা প্রকাশ্যে বলে না বেড়ায়। বরং তার পাপের জন্য গোপনে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে থাকে ।এবং ইনশাআল্লাহ কেয়ামতের দিন আল্লাহ পাপ গুলো ক্ষমা করে দিবেন। কিন্তু সে যদি তার পাপগুলো প্রকাশ্যে নিয়ে আসে তাহলে আল্লাহতালা অত্যন্ত রেগে যান ।এবং তার জন্য খারাপ পরিণতি বয়ে নিয়ে আসবে।
হিসাব নেয়ার সময় তৃতীয় দল হবে তারা ,যাদের কঠিন হিসাব নেয়া হবে। এবং যাদের এই কঠিন হিসাব নেয়া হবে তারাই ধ্বংস।বোখারী ও মুসলিম হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে বলেন হিসাবের সময় যার ই খুঁটিনাটি হিসাব নেয়া হবে সেই সাজাপ্রাপ্ত হবে ।এই দলের ব্যক্তিদের তাদের জীবনের প্রতিটি কাজের জন্য প্রতিটি মুহূর্তের জন্য ছোট বড় প্রতিটি নেয়ামতের জন্য প্রশ্ন করা হবে ।এবং এ দলের লোকদের কোনো উত্তর থাকবেনা
ভেবে দেখুন আমাদের যদি শুধু গত এক সপ্তাহের কর্মকাণ্ডের জন্য প্রতিটি সেকেন্ড আমরা কিভাবে ব্যয় করেছি ,প্রতিটি পয়সা আমরা কিভাবে আয় করেছি, এবং তা কিসের পেছনে খরচ করেছি ,প্রতিটি নিয়ামত পাওয়ার পর আমরা কিভাবে তা ব্যবহার করেছি এই নিয়ে প্রশ্ন করা হয়,হইতো এক সপ্তাহের হিসাবে আমাদের পরিণতি ভয়ঙ্কর হয়ে যাবে। ভেবে দেখুন যে ব্যাক্তিকে বালেগ হওয়ার পর থেকে তার থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি মুহূর্তের জন্য জবাবদিহিতা করতে হবে তার পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হবে। তাই আমরা প্রতিনিয়ত আল্লাহর কাছে দোয়া করি আমাদের যা প্রাপ্য তিনি যেনো আমাদের তা না দেন। আমাদের যা প্রাপ্য তা পেলে তো আমরা ধ্বংস হয়ে যাব ।বরং তিনি যেন আমাদের প্রতি বিশেষ রহমত প্রদর্শন করেন। যা ছাড়া আমরা কখনোই জান্নাত লাভ করতে পারবোনা।

কোন মন্তব্য নেই

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

konradlew থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.