বারজাখের জীবন (পর্ব -৪)

বারজাখের জীবন (পর্ব -৪)


গতপর্বে আমরা আদম আলাইহিস সালাম থেকে সকল মানব রুহের উৎপত্তি বিষয়ে জেনেছিলাম। প্রশ্ন হলো, এই রুহগুলো কিভাবে মাতৃগর্ভে আসে??

বুখারী শরীফের হাদিসে আছে, মাতৃগর্ভে অল্প কিছুদিন পার হওয়ার পর ফেরেশতারা রুহ নিয়ে আসেন এবং সেটাকে ফুকে দেন। রুহ ফুকে দেয়ার আগ পর্যন্ত সেটাকে মানব শরীর বলা যায় না। বলা হয় রক্তপিণ্ড। সুতরাং আদম আঃ এর রুহ ফুকেছেন আল্লাহ তায়ালা নিজে এবং বাকী সকল মানব সন্তানের রুহ ফুকবেন ফেরেশতাগণ।
মোট ৫ ভাবে এই রুহ থাকতে পারে।

★ফেরেশতারা মাতৃগর্ভে রুহ ফুকে দেয়ার আগ পর্যন্ত তা কোথায়, কিভাবে, কি অবস্থায় থাকে কেউ জানে না।
★রুহ ফুকার পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে রুহ এবং আমাদের শরীরের মধ্যে একটা যোগাযোগ স্থাপিত হয়। এটাকে বলে সচেতন অবস্থা।


★ঘুমন্ত অবস্থা। এ অবস্থায় সাময়িকভাবে রুহ আমাদের শরীর ছেড়ে চলে যায়। ইবনুল কায়্যিম রহঃ বলেন," শরীর এবং রুহের মধ্যে অদ্ভুত এক যোগাযোগ আছে। ঘুমালে রুহ শরীর ছেড়ে চলে যায়। আর যখন রুহ আমাদের শরীরে ফিরে আসে তখন আমরা জাগ্রত হই।

সূরা জুমার এ আল্লাহ বলেন, "আল্লাহ্ই জীবসমূহের প্রাণ হরণ করেন তাদের মৃত্যুর সময় এবং যাদের মৃত্যু আসেনি তাদের প্রাণও নিদ্রার সময়। তারপর তিনি যার জন্য মৃত্যুর সিদ্ধান্ত করেন তার প্রাণ তিনি রেখে দেন এবং অন্যগুলো ফিরিয়ে দেন, এক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। নিশ্চয় এতে নিদর্শন রয়েছে এমন সম্প্রদায়ের জন্য, যারা চিন্তা করে।"(সূরা জুমারঃ ৪২)। সুতরাং যখন অস্থায়ীভাবে রুহ বেরিয়ে যায়, তাকে বলে ঘুমন্ত অবস্থা।

★আর যখন রুহ ও শরীরের যোগাযোগ স্থায়ীভাবে ভেঙে যায়, তখনই শুরু হয় বারজাখ বা কবরের জীবন।এবং এটি অব্যাহত থাকে শেষবার শিঙ্গা বেজে উঠার আগ পর্যন্ত।

★শেষবার শিঙ্গা বেজে ওঠার পর রুহ নতুন করে তার শরীরে ফিরে যাবে এবং আর কখনই তা বের হবে না৷ কারণ এরপর আর মৃত্যু নেই। হাশরের মাঠে আল্লাহ তায়ালা মৃত্যুকেই মেরে ফেলবেন। সুতরাং এটাই হলো রুহের সর্বশেষ অবস্থা।

আর আমাদের এই সিরিজের আলোচ্য বিষয় হলো ৪ নম্বর ধাপ। অর্থ্যাৎ বারজাখ বা কবরের জীবন।

(ইয়াসীর ক্বাদীর লেকচার অবলম্বনে অনুবাদকৃত )
Farzana_haque




কোন মন্তব্য নেই

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

konradlew থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.