জীবন - মৃত্যু -জীবন-৭

মিজান-৭


হিসাবকাজ শুরু হয়ে গেছে,,আল্লাহ তালাহ হাশরের ময়দানে মিজান স্থাপন করলেন।মিজান হলো দাড়ি পাল্লা,একে আমরা দাড়িপাল্লা বলবো কিভাবে,এইটা
এত বিশাল যে পুরো আসমান,জমিন এ যা কিছু আছে সব গুলো মাপা যাবে এই মিজান এ।।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আজ আমি তাদের মুখে মোহর মেরে দেব; তাদের হাত আমার সঙ্গে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে।’ (সুরা ইয়াসিন : আয়াত ৬৫)
মানুষের হিসাব নিয়া শুরু হলো,হিসাব ৩ ধরনের নিয়া হবে,একদল কে বিনা হিসেবে জান্নাত দিয়া হবে,একদল এর হবে সহজ হিসাব আর একদল এর হবে কঠিন হিসাব।
নবি বলেছেন,৭০ হাজার মানুষ বিনা বিচারে জান্নাতে যাবে।
(বুখারি)
এর মধ্যে আবার একহাজার মানুষ ৭০ হাজার মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যেতে পারবে।তার পর অবশিষ্ট মুমিন বান্দাদের থেকে আল্লাহ তালার দুই হাত ভরে জান্নাতে দিয়ে দিবেন,যাদের হিসাব নিয়া হবে না।যেই আল্লাহ কত বিশাল তা আমাদের কল্পনারও ঊর্ধ্বে, সেই আল্লাহর হাত কত বড় তা আমরা ভাবতে পারি না।আমরা চাই আমরা যেন এই দলে থাকতে পারি।

আরেকদল লোকের হিসাব হবে সহজ হিসাব,যারা মুমিন ছিল কিন্তু পাপ করেছে,এই সব লোকের জন্য আল্লাহ সহজ হিসাব নিবেন,আর তাদের খারাপ কাজ কে মাফ করে দিয়ে তাদের ভালো আমলগুলো দেখাবেন।।এরা ও জান্নাতে যাবে।
এই জন্যে আল্লাহ বলেন,তোমরা খারাপ কাজ করলে তা যেন সবাইকে না বলে,গোপনে রেখে আল্লাহর কাছে গোপনে ক্ষমা চাইতে, তাহলে আল্লাহ গোপনেই ক্ষমা করে দেন।।

এরপর যাদের হিসাব নিয়া হবে তাদের প্রতিটা মুহূর্তের হিসাব নিয়ে হবে আর এরাই জাহান্নাম এ যাবে।একবার ভেবে দেখুন আপনাকে যদি ৭ দিনের হিসাব দিতে বলে হয় তাহলে এই ৭ দিনের হিসাবেই তো আমরা জাহান্নামে চলে যাবো।
আল্লাহ বলেন,"আর সে দিন যথার্থই ওজন হবে। অতঃপর যাদের দাঁড়িপাল্লা ভারি হবে, তারাই সফলকাম হবে। আর যাদের (আমলের) দাঁড়িপাল্লা হালকা হবে, তারাই এমন হবে, যারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করেছে। কেননা তারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করতো।’ (সুরা আরাফ : আয়াত ৮ ও ৯)
এরপর যারা ভালো কাজ করবে তাদের আমলনামা ডানহাতে দিয়া হবে আর খারাপ মানুষদেরকে বাম হাতে।এরপর সবার আমলনামা মিজান এ মাপা হবে।যাদের ভালো কাজগুলোর ওজন ভারি তারা জান্নাতে যাবে আর যাদের খারাপ কাজ গুলোর ওজন বেশি তারা জাহান্নাম এ যাবে।
মহান আল্লাহ আরও বলেন, ‘অতএব যার পাল্লা ভারী হবে, সে সুখী জীবনযাপন করবে, আর যার পাল্লা হালকা হবে, তার ঠিকানা হবে হাবিয়া। আপনি জানেন তা কি? (তা হলো) প্রজ্বলিত আগুন।’
(সূরা কারিয়া : ৬-১১)।

সেইদিন খারাপকাজ অনেকবেশি হলেও তা অনেক হালকা মনে হবে আর ভালো কাজ সামান্য মনে হলেও তা অনেক ভারি মনে হবে।
বলা হয়েছে,যদি "লা ইলাহা ইল্লালাহ, মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ "" একপাল্লায় থাকে আর আরেক পাল্লায় গোটা দুনিয়া থাকে তবে লা ইলাহা ইল্লালাহ ওইটাই ভারি মনে হবে।(নাসাঈ,ইবনে হিক্কাম)

নবি বলেন,"দুইটা বাক্য যা মুখে উচ্চারন এ অনেক সহজ, কিন্তু মিজান এ অনেক ভারি,তা হলো সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি এবং সুবহানাল্লিহিল আযীম""(বুখারি)
আমরা আল্লাহর ইবাদত করলে ও সেইটা মনোযোগ দিয়ে করি না,,কিন্তু মিজানে সব থেকে বেশি ভারি হবে যেইটা একান্ত আল্লাহকে খুশি করার জন্যই করা হবে।তাই আমাদের উচিত হবে,যতটুকুই আমল করবো সেইটা মনোযোগ দিয়ে করার।
সেইদিন একটা লোক অনু পরিমান ভালো কাজ করলে ও তা দেখতে পাবে,কেও অনু পরিমান খারাপ কাজ করলে ও দেখতে পাবে। আল্লাহ বলেন"কারও প্রতি জুলুম করা হবে না। যদি কোনো আমল সরিষার দানা পরিমাণও হয়, আমি তাও উপস্থিত করব এবং হিসাব গ্রহণের জন্য আমিই যথেষ্ট।’ (সূরা আম্বিয়া : ৪৭)।
মিজানের শেষে সবাইকে সিরাত পাড়ি দিতে হবে।আগামি পর্বে সিরাত নিয়া আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।
courtesy :bessera media..





কোন মন্তব্য নেই

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

konradlew থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.